যুক্তরাষ্ট্রের ১৬টি অঙ্গরাজ্যের পক্ষ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য ট্রাম্পের জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত আটকে দিতে নেওয়া হয়েছে এ উদ্যোগ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে ট্রাম্পের চাহিদা মাফিক অর্থ দেওয়া নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় গত ডিসেম্বরে আংশিক শাটডাউনের মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দের মধ্য দিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি ৩৫ দিনের সে শাটডাউনের অবসান হয়। নতুন করে অচলাবস্থা এড়াতে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিনিধি পরিষদ আবারও বাজেট অনুমোদন দেয়। তবে এক্ষেত্রে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য ট্রাম্পকে সীমিত বরাদ্দ দেওয়া হয়। ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যেকোনোভাবেই হোক দেয়াল নির্মাণ করা হবে। এরপর কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ পেতে যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি। জরুরি অবস্থা জারির ফলে সামরিক কিংবা দুর্যোগ খাতের মতো বিভিন্ন খাত থেকে দেয়াল নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে পারবেন ট্রাম্প।
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করে যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ অঙ্গরাজ্য। ক্যালিফোর্নিয়ার নেতৃত্বে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দ্য নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব ক্যালিফোর্নিয়াতে এ মামলা হয়। অঙ্গরাজ্যগুলো হলো-কলোরাডো, কানেকটিকাট, ডেলাওয়ার, হাওয়াই, ইলিনয়, মেইন, ম্যারিল্যান্ড, মিনেসোটা, নেভাদা, নিউ জার্সি, নিউ মেক্সিকো, নিউ ইয়র্ক, ওরিগন, ভার্জিনিয়া ও মিশিগান ও ক্যালিফোর্নিয়া।
এক বিবৃতিতে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল জেভিয়ার বেসেরা বলেন, ‘আজ প্রেসিডেন্ট দিবসে আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছি যেন তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার না করতে পারেন।’ ডেমোক্র্যাট দলীয় এ নেতা আরও বলেন, ‘কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে ট্রাম্প যেন একতরফাভাবে কর পরিশোধকারীদের তহবিল ছিনিয়ে নিতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করছি।’
এ মামলার ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
মেক্সিকো সীমান্তে স্থায়ী দেয়াল নির্মাণ ছিল ট্রাম্পের অন্যতম নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি। নির্মাণ কাজ শুরু করতে চলতি বছর কংগ্রেসের কাছে ৫৭০ কোটি ডলার চেয়েছিলেন তিনি। তবে সে টাকা দিতে সম্মত না হওয়ায় কংগ্রেসেরে অনুমোদন দেওয়া অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দে স্বাক্ষর করেননি ট্রাম্প। সেকারণে ৩৫ দিন অচল হয়ে থাকে মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারের একাংশ। সর্বশেষ অস্থায়ী বাজেটে স্বাক্ষর করে সরকার সচল রাখলেও তাতে দাবিকৃত অর্থ বরাদ্দ না পেয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পথেই হাঁটেন ট্রাম্প।