ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, মানবতার শত্রুদের হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে ঐশ্বরিক শক্তি সবসময় ভারতের সঙ্গে রয়েছে। সরকার ‘মন্দ আত্মা ও অপদেবতাদের’ কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার সাউথ দিল্লিতে ইসকনের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
১৪ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পুলওয়ামাতে আরডিএক্স বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে ‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স’র গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে বহরের ৭০টি গাড়ির মধ্যে একটি বাস সম্পূর্ণ ভস্মিভূত হয়ে যায়। প্রাণ হারায় বাহিনীর অন্তত ৪৪ সদস্য। পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ওই হামলা সংঘটিত হয়েছে দাবি করে তখন থেকেই সামরিক হামলার হুমকি দিয়ে আসছিল ভারত। এর ধারাবাহিকতায় ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোর সাড়ে ৩টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণরেখার পাকিস্তানি অংশে ঢুকে পড়ে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। এ হামলার পর ভারতজুড়ে চলছে মোদি সমর্থকদের উল্লাস। বিশ্লেষকদের ধারণা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই হামলা জনপ্রিয়তা বাড়াবে সরকারের। তবে ইসলামাবাদ বরাবরই ভারতীয় হামলার দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলছে, ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী।
সামরিক বাহিনী মিডিয়া উইংয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর বলেন, ‘এবার আপনাদের পালা, চমকানোর জন্য প্রস্তুত হন।’ পাকিস্তানের আকাশসীমায় ভারতের ২১ মিনিট অবস্থান করার দাবিও ভিত্তিহীন মন্তব্য করেছেন তিনি। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভারত আমাদের আকাশে এসে ২১ মিনিট থেকে দেখাক, তারপর দেখবেন কি হয়।
পাকিস্তানের হুঁশিয়ারিতে অবশ্য থেমে নেই মোদি সমর্থকদের উচ্ছ্বাস-উন্মাদনা। বিশ্লেষকরা বলছেন, কর্মসংস্থানের অভাব কিংবা নিম্ন আয়ের মতো ইস্যু এবার চাপা পড়ে যাবে। দেশপ্রেমের কারণে এই হামলা ভোটারদের মাঝে আরও বেশি প্রভাব ফেলবে; যা মোদিকে নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে সহায়তা করবে।
ভারতের অন্যতম বৃহত্তম জরিপ প্রতিষ্ঠানে সিএনএক্স এর প্রতিষ্ঠাতা ভবেশ ঝা রয়টার্স’কে বলেন, যেসব বিজেপি সমর্থকরা দ্বিধান্বিত ছিলেন, তারা এখন স্বস্তিবোধ করবে। তিনি বলেন, ‘এই সমর্থকরাই এখন মোদিকে জেতানোর জন্য পরিশ্রম করবে। যেহেতু নির্বাচন খুব নিকটে, তাই পুলাওয়ামাই হবে সবচেয়ে বড় ইস্যু।’ সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, রয়টার্স।