অযোধ্যা মামলা মধ্যস্থতায় নিষ্পত্তির আদেশ ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের

রাম জন্মভূমি, না বাবরি মসজিদ; ৬০ বছর ধরে চলা এই বিরোধ মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। দেশটির প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈইর নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বেঞ্চ শুক্রবার তিন সদস্যের মধ্যস্থতা প্যানেল গঠন করে দিয়ে এই আদেশ দিয়েছেন। প্যানেলকে আগামী ৮ সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতের সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দিলেও বিরোধে জড়িত বেশ কয়েকটি পক্ষ মধ্যস্থতা মানতে রাজি নয়।

১৯৯২ সালে বিক্ষুব্ধ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হামলায় ধ্বংস হয় বাবরি মসজিদ

উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে বাবরি মসজিদের অবস্থান। হিন্দু ধর্মাবলম্বী একাংশের দাবি, যেখানে মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে সেই জায়গাটি ছিল রামের জন্মভূমি, তা ভেঙে মসজিদ বানানো হয়। এ নিয়ে হিন্দু-মুসলিম বিরোধ বহুদিনের। ১৯৯২ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন থাকার সময়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বাবরি মসজিদ। একে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রাণ হারায় অন্তত ২ হাজার মানুষ। ভারতের প্রাচীন শহর অযোধ্যার ওই বিতর্কিত স্থানটি কোন সম্প্রদায়ের দখলে থাকবে, তা নিয়ে মামলা চলছে ৬০ বছর ধরে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এই মামলার রায় দেন।


প্রধান বিচারপতি তার আদেশে বলেন, এই মামলাটি শুধু কোনও জমির বিরোধ নয়, এটি মানুষের হৃদয়, আবেগ আর কষ্ট নিরসনের বিরোধ।
সুপ্রিম কোর্টের গঠিত প্যানেলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশটির অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এফএম ইব্রাহিম কলিফুল্লাহকে। প্যানেলের বাকি দুই সদস্য হলেন সিনিয়র আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চু এবং ভারতের হিন্দু ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর। তবে এই প্যানেল চাইলে আরও সদস্য নিযুক্ত করতে পারবে বলে জানিয়েছে আদালত।
প্রধান বিচারপতি আদেশে আরও বলেন, অযোধ্যা বিরোধ নিরসনে মধ্যস্থতা হতে পারে। এতে কোনও আইনি বাধা দেখছি না আমরা। তিনি জানান, মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া গোপন রাখা হবে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না।
এক সপ্তাহের মধ্যে প্যানেলকে কাজ শুরুর কথা বলে পরবর্তী চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে অগ্রগতি জানাতে বলা হয়েছে। কাজ শেষ করতে ওই প্যানেলকে আট সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বুধবার এই মামলায় শেষ শুনানির দিনে উত্তর প্রদেশ সরকারসহ বেশিরভাগ হিন্দু আবেদনকারী মধ্যস্থতার বিরোধিতা করেছেন। তবে মুসলিম পক্ষ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড মধ্যস্থতাকে আরেকটি সুযোগ দিতে চায়। তবে আলোচনার গোপনীয়তা রক্ষা নিয়েও উদ্বেগের কথা জানান তারা। মামলার আরেক পক্ষ নির্মোহী আখরাও মধ্যস্থতার পক্ষে সম্মতি দিয়েছে।