ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করলেন আব্বাস

দীর্ঘদিনের সহযোগী মোহাম্মদ শতায়েহকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেছেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহকে উদ্ধৃত করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবরটি জানিয়েছে। এদিকে শতায়েহকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছে হামাস।

শতায়েহ (বামে) ও আব্বাস (ডানে)
মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ’র কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য শতায়েহ। ৬১ বছর বয়সী শতায়েহ সাবেক সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ জানিয়েছেন, শতায়েহকে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহ’র স্থলাভিষিক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আব্বাস।

রুদেইনেহ’র ভাষ্য অনুযায়ী, রবিবার (১০ মার্চ) শতায়েহকে নিজ কার্যালয়ে অভ্যর্থনা জানান ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট, এরপর তাকে নতুন সরকার গঠন করতে বলেন তিনি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে আরও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে শতায়েহকে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী রামি হামাদাল্লাহর স্থলাভিষিক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আব্বাস। হামাস ও ফাতাহ’র মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের সময়ে পূর্ববর্তী সরকার গঠিত হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন প্রশাসনে ছোট দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব থাকলেও সেখানে ফাতাহ’র আধিপত্য থাকবে। নতুন প্রশাসনে হামাস অন্তর্ভুক্ত থাকছে না। শতায়েহকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের খবরে ক্ষোভ জানিয়ে হামাস বলেছে, এর মধ্য দিয়ে ‘আব্বাসের একতরফাবাদ ও ক্ষমতার একাধিপত্য’ প্রতিফলিত হয়েছে। এক বিবৃতিতে হামাসের মুখপাত্র ফাউজি বারহুম বলেন, ‘জোরালোভাবে বলছি, হামাস এ বিচ্ছিন্নতাবাদী সরকারকে স্বীকৃতি দেয় না কারণ এটি জাতীয় সম্মতি ছাড়াই গঠিত হয়েছে।’

রামি হামাদাল্লাহর সরকার গত জানুয়ারির শেষের দিকে পদত্যাগ করেছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে কাজ করছে তারা।

উল্লেখ্য, হামাসের তুমুল প্রতিরোধের মুখে ২০০৭ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল পশ্চিমা সমর্থিত রাজনৈতিক দল ফাতাহ। তবে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মিসরের মধ্যস্ততায় ফাতাহ সমর্থিত সরকারের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে গাজার ক্ষমতা হস্তান্তরে একটি চুক্তিতে রাজি হয় হামাস। মূলত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও মিসরের অব্যাহত অবরোধ, ফাতাহ সরকারের তৈরি বিদ্যুৎ সংকট এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন না দেওয়ার মুখে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে হামাস। এমন পরিস্থিতি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এ দলটিকে পশ্চিমা সমর্থিত ফাতাহ’র সঙ্গে চুক্তিতে উপনীত হতে বাধ্য করে। গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে একটি মতৈক্যের সরকার কার্যকর করতে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ফাতাহ ও হামাস একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। সে অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শুরুর কথা ছিল। ওই সমঝোতা চুক্তিটির জামিনদার ছিল মিসর। দুই পক্ষই পরে মিসরকে গাজা উপত্যকায় পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন স্থগিত করতে বলে।