নিউ জিল্যান্ডে মসজিদে হামলা, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা নিরাপদ

নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলা হয়েছে। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউতে আল নুর মসজিদ এবং লিনউডের আরেকটি মসজিদের কাছ থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে পুলিশের বরাত দিয়ে ঘটনাটিকে ‘মারাত্মক’ বলা হয়েছে। শুক্রবার হামলার সময়ে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য আল নুর মসজিদের পথে ছিলেন নিউ জিল্যান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা। হামলার পরই তারা ওই এলাকা ত্যাগ করেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা সবাই নিরাপদ আছেন বলে বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন দলের ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট। হামলার পর পুলিশের তরফ থেকে বেশ কয়েক জন হতাহত হওয়ার কথা জানানো হলেও এখন পর্যন্ত সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়নি। নিউ জিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমগুলোতে ৯ থেকে ২৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এরইমধ্যে চার সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। আর কোনও বন্দুকধারী পালিয়ে আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে অভিযান চলছে।

noname

হামলার পর আশেপাশের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শহরের ক্যাথিড্রাল স্কয়ারে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে একটি র‍্যালিতে অংশ নিতে কয়েক হাজার শিশু  জড়ো হওয়ার পর ওই জায়গাটি খালি করে ফেলা হয়েছে।

টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নিউ জিল্যান্ড সফরে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা বর্তমানে ক্রাইস্টচার্চে অবস্থান করছেন। টুইটারে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে, হামলার ঘটনার পরই হাগলি পার্ক থেকে বাংলাদেশ দলের কয়েক ক্রিকেটারকে দ্রুত চলে যেতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্য মুশফিকুর রহিম ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন হামলার সময়ে খুবই কাছাকাছি ছিলেন তারা। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলা থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন। আমরা খুবই ভাগ্যবান, সর্বশক্তিমান আমাদের রক্ষা করেছেন। আমরা খুবই কাছাকাছি ছিলাম আর আবারও এধরণের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে চাই না। আমাদের জন্য দোয়া করবেন'।

তবে বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, 'দলের প্রতিটি খেলোয়াড় নিরাপদে আছে। তাদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সবাই বর্তমানে হোটেলে অবস্থান করছে।' বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র জালাল ইউনুস ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, দলের সদস্যরা বাসে করে মসজিদে যাচ্ছিলেন। হামলার শুরুর আগে তারা মসজিদে প্রবেশ করছিলেন। তিনি বলেন, তারা নিরাপদ আছে। তবে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। আমরা তাদের হোটেলেই থাকার নির্দেশ দিয়েছি'।

রেডিও নিউ জিল্যান্ডের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার আল নুর মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে ৩০০ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, অন্তত ২০টি গুলির শব্দ শুনেছেন তিনি। এসব গুলির শব্দ আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে ছোড়া বলে ধারণা করেছেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিনউডের আরেকটি মসজিদ থেকেও গুলির শব্দ শোনার কথা জানানো হয়েছে।