ঠেকানোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ছড়িয়ে পড়ছে নিউ জিল্যান্ড হামলার ভিডিও

নিউ জিল্যান্ডের মসজিদে হামলার সময় হামলাকারী যে ভিডিও ধারণ করেছেন, তা প্রচার না করতে সতর্ক করেছে সে দেশের পুলিশ। ফেসবুক-টুইটার ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা পুলিশি নির্দেশনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিডিওটি মুছতে তৎপর হয়েছে। তা সত্ত্বেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে ভিডিওটি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো হামলাকারীর একাউন্ট থেকে ভিডিওটি সরিয়ে নিলেও এর ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ওই ভিডিও এখন ভাইরাল।noname

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৫ মার্চ) নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলা হয়। আক্রান্ত হয় শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউতে আল নুর মসজিদ এবং লিনউডের আরেকটি মসজিদ।  হামলাকারী বন্ধুকধারী তার হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ প্রচার করেছিলো। স্বয়ংক্রিয় বন্দুক হাতে হামলাকারীর এগিয়ে যাওয়া, মসজিদের প্রবেশকক্ষ থেকে বিভিন্ন কক্ষে নির্বিচারি গুলি বর্ষণ আর রক্তাক্ত নৃশংস পরিস্থিতির ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই তৎপর হয় নিউ জিল্যান্ডের পুলিশ।

পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ফুটেজ সরিয়ে ফেলতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন তারা। তিনি বলেন ‘এটি (হামলার ফুটেজ) পাবলিক ডোমেইনে থাকা যথাযথ না’। টুইটার পোস্টে নিউ জিল্যান্ড পুলিশের প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, আমরা ওই ভিডিও শেয়ার করার শক্ত বিরোধিতা করছি।

১৭ মিনিটের ওই ভিডিওটি নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে লাইভ করেছিল হামলাকারী। ফেসবুকের নিউজিল্যান্ড অফিসের মুখপাত্র মিয়া গার্লিক এক বার্তায় দাবি করেন, ‘ঘটনার পরই পুলিশ আমাদের সতর্ক করে ভিডিওটির ব্যাপারে। আমরা তখনই ভিডিও প্রচারকারীর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করি এবং ভিডিওটি ডিলিট করি। আমরা নিউজিল্যান্ডের পুলিশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।’ তবে এইসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সেই ভিডিও কিছুক্ষণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে একাধিক একাউন্টের মাধ্যমে। 

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ মিনিটের ওই নৃশংস ভিডিওটি ফেসবুক সন্দেহভাজন হামলাকারীর একাউন্ট থেকে মুছে ফেললেও ডাউনলোড করে তা ততোক্ষণে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন একাউন্টে ছড়িয়ে পড়েছে।
টুইটার কর্তৃপক্ষ তাদের বার্তায় দাবি করে, ‘নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আজ যে ঘটনা ঘটেছে তাতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমাদের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদল কাজ করছে ভিডিওটি খুঁজে বের করে তা মুছে ফেলতে। সেইসঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত আমরা।’ইউটিউবের বার্তায় বলা হয়, ‘বিশ্বাস করুন, সহিংস যে কোনও ফুটেজ মুছতে আমরা অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।‘

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ওই ভিডিও ভাইরাল হয়ে এখনও সোশ্যাল মিডিয়ার বড় জায়গা দখল করে আছে। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো সে ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলতে হিমশিম খাচ্ছে।