হামলাকারীর নাম কখনও মুখে আনবো না: নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলাকারীর নাম কখনও মুখে না আনার শপথ নিয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। সেদেশের পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে জাসিন্ডা বলেছেন, হামলাকারী তার অপকর্মের প্রচার চেয়েছিল; আর সে উদ্দেশ্য সফল হতে না দিতেই হামলাকারীর নাম উচ্চারণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

জাসিন্ডা আরডার্ন
শুক্রবার (১৫ মার্চ) নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ এলাকার দুইটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ জন নিহত হয়েছে। সন্দেহভাজন হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্টের মধ্যে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী প্রবণতা পাওয়া গেছে। ট্যারান্ট মনে করে ‘মুসলিমদের জন্য ভীতিকর পরিস্থিতি’ তৈরি করা উচিত এবং শ্বেতাঙ্গরা ‘গণহত্যার শিকার।’ ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে হামলায় নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, কুয়েত, সোমালিয়াসহ বিভিন্ন দেশের মুসলিম অভিবাসী, শরণার্থী ও স্থায়ী অধিবাসীরা রয়েছেন। ট্যারান্টের বিরুদ্ধে নিউ জিল্যান্ডের আদালতে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ক্রাইস্টচার্চের হামলার পর মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) প্রথমবারের মতো বিশেষ অধিবেশনে বসে নিউ জিল্যান্ডের পার্লামেন্ট। সেখানে দেওয়া ভাষণে জাসিন্ডা আরডার্ন ক্রাইস্টচার্চ হামলাকারীর নাম মুখে না নেওয়ার শপথ নেন। বলেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটনের মধ্য দিয়ে সে অনেক কিছু চেয়েছে। এর একটি হলো নিজের অপকর্মের প্রচার চাওয়া। সেকারণে আপনারা আমার মুখে কখনও তার নাম শুনবেন না।’  

অন্যদেরকেও হামলাকারীর নাম মুখে না আনার অনুরোধ জানান জাসিন্ডা।বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করছি: যে ব্যক্তি অন্যদের জীবন কেড়ে নিয়েছে তার নাম না নিয়ে যারা জীবন হারিয়েছে তাদের নাম নিন।’

উল্লেখ্য, মসজিদে হামলার আগে অনলাইনে ১৬ হাজার ৫০০ শব্দের একটি ইশতেহারে নৃশংস এ হামলার পেছনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে সন্দেহভাজন হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্ট। সেখানে মোটা দাগে উঠে আসে মুসলিমবিদ্বেষ, অভিবাসী বিদ্বেষ ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের মতো বিষয়গুলো। মুসলমানদের উসমানীয় খিলাফতের (বর্তমান তুরস্ক) বিরুদ্ধে তৎকালীন ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের বিজয়ের কথাও উল্লেখ করেছে সে। বর্তমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের মৃত্যুও কামনা করে হামলাকারী।