অশ্রুসিক্ত চোখে কেবলই আল নুর মসজিদের দিকে তাকিয়ে থাকেন বাংলাদেশি নাসির

হামলায় আক্রান্ত ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করেন নিউ জিল্যান্ডের বাংলাদেশি অভিবাসী নাসির উদ্দিন। তবে ১৫ মার্চ হামলার দিনে কাজে আটকা পড়েছিলেন। নয়তো দুর্ভাগ্য সঙ্গী হতে পারতো তারও। সেদিন নামাজ আদায় করতে যাওয়া দুই বন্ধুর মৃত্যুর খবর জেনেছেন নাসির। অশ্রুসিক্ত চোখে তাই কেবলই ওই মসজিদের দিকে তাকিয়ে থাকেন তিনি।

হাগলি পার্কে বাংলাদেশি অভিবাসী নাসির উদ্দিন

 

১৫ মার্চ (শুক্রবার) ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদ। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউর আল নুর মসজিদসহ লিনউডের আরেকটি মসজিদে তার তাণ্ডবের বলি হয় অর্ধশত মানুষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির ১৭ মার্চ তারিখের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ৩৭ বছর বয়সী নাসির উদ্দিন ছিলেন দক্ষিণ দ্বীপাঞ্চলে। পাঁচ বছরের কিছু বেশি সময় হবে, সেখান থেকে ছবির মতো সুন্দর শহর ক্রাইস্টচার্চে চলে যান তিনি। হামলার পর বিবিসি সরেজমিন তার সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে দেখে, হাগলি পার্কের গাছের ভেতর দিয়ে ওপারের আল নুর মসজিদের সোনালি ছাদ আর বাইরের দেয়ালের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন তিনি। তখনও পুলিশি নিরাপত্তায় ঘেরা থাকায় চাইলেও মসজিদের খুব বেশি কাছে যেতে পারছিলেন না। অশ্রুসিক্ত চোখে কেবলই নীরবে মসজিদ ভবনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। ক্রাইস্টচার্চের পার্কটিতে দাঁড়িয়ে কাঁপতে কাঁপতে তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা এখন গভীর ভারাক্রান্ত’।
হামলায় নিহত অর্ধশত মানুষের মধ্যে আল নুর মসজিদের হামলায় প্রাণহানি হয় ৪৩ জনের। নাসির উদ্দিন বিবিসিকে জানান, শুক্রবারে আল নুর মসজিদে সবাই জড়ো হয়। সেখানকার সবকিছুই চমৎকার। কেবল নামাজ আদায় করা নয়, জুমাবার তাদের জন্য বন্ধুদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মিলনের দিনও। নাসির বিবিসিকে বলেন, হামলার কথা শুনেই তিনি একের পর এক মানুষকে ফোন করতে থাকেন। কিন্তু কেউই কোনও সাড়া দেয়নি। তিনি জানেন তার অন্তত দুই বন্ধু মারা গেছেন। তখন পর্যন্ত বাকিদের খবর পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। বিবিসিকে সেই অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে নাসির বলেন, ‘এটা আরও অনেক বেশি কষ্টের’।