বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নিউ জিল্যান্ডে হাজারো মানুষের পদযাত্রা

নিউ জিল্যান্ডের দুই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৫০ মুসল্লির প্রাণহানির ঘটনায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে দেশটির মানুষ। স্থানীয় সময় রবিবার বিকালে অকল্যান্ডের রাস্তায় বর্ণবাদবিরোধী পদযাত্রায় শামিল হন হাজারো মানুষ। এ সময় তারা মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। এদিন স্ক্রাইস্টচার্চ মসজিদ সংলগ্ন নর্থ হাগলে পার্ক এলাকায়ও একই রকমের পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে নিউ জিল্যান্ডভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনজেড হেরাল্ড।

২০১৯ সালের ১৫ মার্চ পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, নিউ জিল্যান্ডের দুই মসজিদে গুলি চালিয়ে ৫০ মুসল্লিকে হত্যা করে উগ্র মুসলিমবিদ্বেষী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। হামলার আগে অনলাইনে ১৬ হাজার ৫০০ শব্দের একটি ইশতেহারে নৃশংস এ হামলার পেছনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে খুনি ব্রেন্টন ট্যারান্ট। সেখানে উঠে আসে মুসলিমবিদ্বেষ, অভিবাসী বিদ্বেষ ও ‘শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের’ মতো বিষয়গুলো। মুসলমানদের উসমানীয় খিলাফত বা অটোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে তৎকালীন ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের বিজয়ের কথাও উল্লেখ করেছে সে। তবে বর্ণবাদী বিদ্বেষ নিউ জিল্যান্ডের যে স্থানটিতে বন্দুকের গুলি হয়ে আছড়ে পড়েছিল, সেই ক্রাইস্টচার্চে সব সময়ই ধ্বনিত হয়ে আসছে বিশ্বমানবের ঐকতান। ভারতীয় উপমহাদেশ আর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মানুষ সেখানে অভিবাসী হয়েছেন। স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় তাদের জড়িয়ে নিয়েছে নিজেদের বুকে। বিশ্বমানুষের এই সম্মিলনের প্রতীক হয়েই সেখানে দাঁড়িয়ে আছে হামলার শিকার হওয়া নুর মসজিদ।

ওই হামলার প্রতিবাদে রবিবার বিকালে যৌথভাবে পদযাত্রার আয়োজন করে লাভ অটিয়ারোয়া (মাওরি ভাষায় নিউ জিল্যান্ডের আদি নাম) এবং হেট রেসিজম নামের দু’টি সংগঠন। অকল্যান্ডের অটিয়া স্কয়ার থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে ভিক্টোরিয়া পার্কে এসে জড়ো হন পদযাত্রায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা। পরে তারা দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন। নীরবতা পালনের আগে তার নিহত ৫০ জনের সবার নাম উচ্চারণ করেন।

পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন রিটা মারা নামের এক নারী। তিনি বলেন, এই পদযাত্রা হচ্ছে আসলে একটি সম্মিলন। তার ভাষায়, ‘বর্ণবাদকে সংজ্ঞায়িত করা কঠিন। আমাদের জন্মের আগে থেকেই এসব ঘটে আসছে;  যা আজ মানুষে মানুষে পার্থক্য তৈরি করছে।’

নিউ জিল্যান্ডে অভিবাসী হওয়া ফিলিপিনো কমিউনিটির প্রায়  শ’খানেক সদস্যও পদযাত্রায় অংশ নেন।