এবার নিজ দেশেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাচ্ছেন মোদি!

পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর এবার নিজ দেশেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর অভিযোগ উঠেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে। কর্নাটকের ক্ষমতাসীন জনতা দল (সেকুলার)-এর অভিযোগ, বিরোধী দল শাসিত রাজ্যে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে মোদি সরকার। ইতোমধ্যেই আয়কর বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাজ্যের ২৫০ থেকে ৩০০ অফিসারকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কর্নাটকে। এর মধ্য দিয়ে মূলত লোকসভা নির্বাচনের আগে অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে যেভাবে ভিন দেশে অভিযান বা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়, একই কায়দায় ভিন্ন দল কর্তৃক শাসিত রাজ্যে আয়কর বিভাগকে দিয়ে রাজনীতিকদের বাড়িঘরে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

nonameবৃহস্পতিবার সকালে টুইটারে দেওয়া পোস্টে এ নিয়ে কথা বলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী জনতা দল (সেকুলার) নেতা এইচ.ডি.কুমারস্বামী। তিনি বলেন, আয়কর বিভাগের এই অভিযানের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সত্যিকারের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। সাংবিধানিক পদে থেকে আয়কর কর্মকর্তা বালাকৃষ্ষকে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশোধের খেলায় সাহায্য করার জন্য বলা হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের এমন ব্যবহার খুবই বেদনাদায়ক। নির্বাচনের সময়ে দুর্নীতিকাজ কর্মকর্তারা বিরোধীদের হয়রানি করছে।

এর আগে বুধবার টুইটারে দেওয়া আরেক পোস্টে এইচ.ডি.কুমারস্বামী বলেন, এই নির্বাচনের সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কর্নাটকের জনতা দল (সেকুলার) এবং কংগ্রেস নেতাদের হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে আয়কর দফতরের অপব্যবহার করছেন। তারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ওপর অভিযান পরিচালনা করছে। এটা প্রতিশোধের রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে এসব করে আমাদের ভীত সন্ত্রস্ত করা যাবে না।

এইচ. ডি. কুমারস্বামী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতি তারা মেনে নেবেন না। পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায় যেভাবে কেন্দ্রের চাপের রাজনীতিকে সামলান তারাও এবার থেকে একই পথে হাঁটবেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-র খবরে বলা হয়েছে, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মমতাকে অনুসরণের ঘোষণা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে বৃহস্পতিবার কর্নাটকের ক্ষমতাসীন জোটের নেতাদের বাড়িতে অভিযান শুরু করেন আয়কর দফতরের কর্মকর্তারা। এ থেকে বাদ যাননি রাজ্য সরকারের মন্ত্রিরাও।

কর্নাটক সরকারের অভিযোগ, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন মোদি সরকার রাষ্ট্রের অধীনে থাকা যাবতীয় সংস্থাকে অবৈধভাবে ব্যবহার করছে। আয়কর বিভাগও এর বাইরে নয়। নির্বাচনের সময় জনতা দল (সেকুলার) এবং কংগ্রেসের সব বড় নেতাদের ইচ্ছাকৃতভাবে স্ক্যানারের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তবে এতে তারা ভীত নন।

রাজ্য সরকারের শরিক কংগ্রেসও কেন্দ্রীয় সরকারের এমন আচরণের নিন্দা জানিয়েছে। টুইটারে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো একজন প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের অপব্যবহার করেছেন। জনগণই তাকে শিক্ষা দেবে।

কর্নাটকে আগামী ১৮ ও ২৩ এপ্রিল লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে আগামী ২৩ মে। সূত্র: এনডিটিভি।