সৌদি আরবের প্রথম পারমাণবিক চুল্লির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ

কয়েক মাসের মধ্যেই প্রথম পারমাণবিক চুল্লির নির্মাণকাজ শেষ করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। রাজধানী রিয়াদের অদূরে বাদশাহ আবদুলাজিজ সাইন্স ও টেকনোলজি সিটিতে নির্মিত হচ্ছে এই চুল্লি। স্যাটেলাইট ইমেজ পর্যবেক্ষণ করে আন্তর্জাতিক অ্যাটোমিক অ্যানার্জি এজেন্সির (আইএইএ) সাবেক পারমাণবিক পরিদর্শক রবার্ট ক্যালি জানিয়েছেন, ৩০ কিলোওয়াটের গবেষণা চুল্লিটির নির্মাণ শেষ হতে আর বাকি নেই। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, চুল্লি নির্মাণ শেষ হয়ে এলেও পারমাণবিক বোমা নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে এখন পর্যন্ত কোনও ধরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা মানার প্রস্তুতি নেয়নি সৌদি আরব।noname

 

ইরানকে মোকাবিলায় গত বছর পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির হুমকি দিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো নেতা বা অনানুষ্ঠানিক সরকারপ্রধান বিন সালমান বলেন, ‘সৌদি আরব কোনও পারমাণবিক বোমা অর্জন করতে চায় না। তবে ইরান যদি পারমাণবিক বোমা তৈরি করে, তাহলে আমরাও যত দ্রুত সম্ভব তা অনুসরণ করবো।’ এই ঘোষণার পর গত বছরের নভেম্বরে প্রথম পারমাণবিক চুল্লির নির্মাণ উদ্বোধন করেন সৌদি যুবরাজ।

স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবিতে দেখা গেছে, ১০ মিটার উঁচু নলাকার স্টিলের পাত্র স্থাপন শেষ হয়েছে। এতে রাখা হবে পারমাণবিক জ্বালানি। দেখা গেছে এর আশপাশে কংক্রিটের ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রে পারমাণবিক গবেষণা ও প্রকৌশল খাতে তিন দশক কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রবার্ট ক্যালি বলেন, আমার ধারণা তারা এটির নির্মাণ প্রায় শেষ করে ফেলেছে। ছাদ বানিয়ে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে এক বছরের মধ্যেই বাকি কাজ শেষ করে ফেলা যাবে।

আইএইএ’র সাবেক পরিদর্শক রবার্ট ক্যালি বলেন, গবেষণা চুল্লির মূল ব্যবহারিক কাজ হবে পারমাণবিক টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষিত করা। তবে এখান থেকে পারমাণবিক কর্মযজ্ঞের সূচনা হতে পারে। চুল্লিতে পারমাণবিক জ্বালানি প্রবেশ করানোর আগে সৌদি আরবকে একটি বিস্তৃত নিয়ম এবং পরিচালনা পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে হবে। এরমধ্যে থাকবে আইএইএ’র পরিদর্শন এবং পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণে ব্যবহৃত ফিউশনযোগ্য উপকরণ ব্যবহার না করার নকশা বাস্তবায়ন করা। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি এড়িয়ে চলছে সৌদি আরব।

পারমাণবিক চুল্লিটির নকশা করেছে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রীয় কোম্পানি ইনভ্যাপ এসই। আইএইএ’তে নিযুক্ত আর্জেন্টিনার দূত রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি নিশ্চিত করেছেন, এই বছরের শেষ নাগাদ চুল্লির কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে। তবে এটি কয়েকটি কারণের ওপর নির্ভর করছে। ইনভ্যাপ নকশার দায়িত্বে রয়েছে। তারা সব কার্যক্রম তদারকি করছে। তবে স্থানীয় প্রকৌশলের কাজ করছে সৌদিরা।