কাশ্মিরে ছুটিতে থাকা সেনা সদস্যকে গুলি করে হত্যা

উত্তর কাশ্মিরের ওয়ারপোরা গ্রামের নিজ বাড়িতে খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে ছুটিতে থাকা এক ভারতীয় সেনা সদস্যকে। স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মোহাম্মদ রফিক ইয়াতু নামের এই সেনা সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সেনা সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার পর ওই এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি শুরু করেছে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।  কয়েকদিন আগে ওই গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দুইদিন ধরে চলা বন্দুকযুদ্ধে দুই বিদ্রোহী নিহত হয়।noname

কাশ্মিরে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর কেউ কেউ সরাসরি স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত। কেউ কেউ আবার কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে। ইতিহাস পরিক্রমায় ক্রমেই সেখানকার স্বাধীনতা আন্দোলন ইসলামিকীকরণ হয়েছে। এখন সেখানকার বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর মধ্যে হিজবুল মুজাহিদিন সবথেকে সক্রিয়। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মিরের জাতিমুক্তি আন্দোলনকে বিভিন্ন জঙ্গিবাদী তৎপরতার থেকে আলাদা হিসেবে শনাক্ত করে না। সন্দেহভাজন জঙ্গি নাম দিয়ে বহু বিদ্রোহীর পাশাপাশি বেসামরিকদের হত্যার অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। শনিবার ওই সেনা সদস্যকে হত্যার দায় এখন পর্যন্ত কোনও সংগঠনই স্বীকার করেনি।

তবে পুলিশের এক মুখপাত্র এই হত্যাকাণ্ডের জন্য কাশ্মিরের বিদ্রোহীদের দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তি সেনা সদস্য ছিলেন। তিনি ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ এই সন্ত্রাসী অপরাধের তদন্ত শুরু করেছে।

সাত বছর আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া মোহাম্মদ রফিক ইয়াতু উত্তর কাশ্মিরে মোতায়েনকৃত ৫২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস-এ কর্মরত ছিলেন। পাঁচদিন আগে ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন তিনি।

ভারতীয় সেনা সদস্যরা প্রায়ই কাশ্মিরের বিদ্রোহীদের লক্ষ্যবস্তু হয়। গত বছরের জুনে ৪৪ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সদস্য আওরঙ্গজেবকে অপহরণ করা হয়। সোপিয়ান জেলা থেকে অপহরণের পর দশ কিলোমিটার দূরে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুঞ্চ জেলার বাসিন্দা আওরঙ্গজেব ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছিলেন। মার্চে সেনা বাহিনীর পলাতক ঘোষিত সদস্য সৈকত আহমেদকে পুলওয়ামার পিনগ্লেনায় গুলি করে হত্যা করা হয়। মার্চের ৯ তারিখে কাশ্মিরের লাইট ইনফ্যান্ট্রির সদস্য ইয়াসিন ভাটের পরিবারের সদস্যরা তাকে অপহরণ চেষ্টা রুখে দেয়।

২০১৭ সালের মে মাসে লেফটেন্যান্ট ওমর ফয়েজকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ওই বছরের নভেম্বরে আরেক সেনা সদস্য ইরফান আহমেদ ধরকে ছুটিতে থাকা অবস্থায় অপহরণ ও হত্যা করা হয়।