ইরানের বিপ্লবী গার্ডকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ আখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের

ইরানের সেনাবাহিনীর অভিজাত ও প্রভাবশালী শাখা রেভ্যুলশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি)-কে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক সপ্তাহের মধ্যে তার ঘোষণা কার্যকর হবে। হোয়াইট হাউসের দাবি, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে ইরানের প্রাথমিক হাতিয়ার আইআরজিসি। ট্রাম্পের ঘোষণার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনীকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তকমা দিলো যুক্তরাষ্ট্র।ইরানের বিপ্লবী গার্ডকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র

গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়া ঘোষণার পর থেকেই ওয়াশিংটন-তেহরান সম্পর্কের উত্তেজনা নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। আধিপত্য বিস্তার, মানবাধিকার হরণ ও সন্ত্রাসে মদদের অভিযোগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে আইআরজিসি সম্পৃক্ত বেশ কয়েক জন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠান।

সোমবার ট্রাম্পের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পররাষ্ট্র দফতরের নেতৃত্বাধীন এই অভূতপূর্ব পদক্ষেপ সেই বাস্তবতাকেই স্বীকৃতি দিয়েছে যে ইরান কেবল রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসে মদদ দেয় না বরং আইআরজিসি-ও তাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়, অর্থায়ন করে আর রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে সন্ত্রাসে মদদ দেয়’।  মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এই পদক্ষেপের কারণে ইরানের ওপর চাপ আরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। ট্রাম্প বলেন, ‘কেউ আইআরজিসির সঙ্গে ব্যবসা করলে মনে করতে হবে সন্ত্রাসে টাকা যোগানো হচ্ছে’।

১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিপ্লবের পরে শিয়া মতালম্বী শাসন ব্যবস্থার সুরক্ষায় গঠন করা হয় ইরানের বিপ্লবী গার্ডস কর্পস বা আইআরজিসি। ইরানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নিরাপত্তা সংস্থা বিবেচনা করা হয় তাদের। ইরানের অর্থনীতির বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বাহিনীটির। ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপরও প্রভাব রয়েছে তাদের। গত শনিবার (৬ এপ্রিল) এক সরকারি কর্মকর্তার সূত্রে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল আইআরজিসি’র বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়ার খবর জানায়।

সোমবার ট্রাম্পের ঘোষণার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানান, এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রেসিডেন্টের ঘোষণা কার্যকর হবে। পম্পেও বলেন, ইরানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্রের মতো আচরণ করতে বাধ্য করতে তেহরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র চাপ অব্যাহত রাখবে। মার্কিন মিত্রদেরও একই ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ইরানের নেতাদের সুবিধাবাদী আখ্যা দিয়ে পম্পেও বলেন, ‘ইরানের নেতারা বিপ্লবী নয় এবং সেখানকার মানুষের আরও ভালো কিছু প্রাপ্য। টুইটারে প্রকাশ করা চিঠিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইরানের মানুষদের স্বাধীনতা ফিরে পেতে আমরা অবশ্যই সহায়তা দেব’।