ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী প্রকাশের আল্টিমেটাম ডেমোক্র্যাটদের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত ছয় বছরের আয়কর বিবরণী প্রকাশের জন্য দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগকে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। ১৩ এপ্রিল শনিবার মার্কিন কংগ্রেসের একদল ডেমোক্র্যাট সদস্য আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে এটি আইনপ্রণেতাদের কাছে সরবরাহের জন্য রাজস্ব বিভাগকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

ডোনাল্ড ট্রাম্পপ্রতিবেদনে বলা হয়, দৃশ্যত এ ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পথে হাঁটছেন ডেমোক্র্যাট দলীয় আইনপ্রণেতারা। ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে আয়কর বিভাগকে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদের ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির চেয়ারম্যান রিচার্ড নীল। তিনি বলেছেন, ২৩ এপ্রিলের মধ্যে আইনপ্রণেতাদের কাছে ট্রাম্পের গত ছয় বছরের আয়কর বিবরণী সরবরাহ না করলে বিষয়টিকে কংগ্রেসের প্রতি রাজস্ব বিভাগের অবজ্ঞা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

ডেমোক্র্যাট দলীয় আইনপ্রণেতারা মূলত ট্রাম্পের গত ছয় বছরের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক আয়কর বিবরণী দেখতে আগ্রহী। এ ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের কমিশনার চার্লস রেটিগের কাছে চিঠিও পাঠিয়েছেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির চেয়ারম্যান রিচার্ড নীল।

এক বিবৃতিতে রিচার্ড নীল বলেন, আমাদের সরকার এবং নির্বাচিত কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের গণতন্ত্রের উপর আস্থা বজায় রাখতে আমেরিকান জনগণকে এ বিষয়টি আশ্বস্ত করা উচিত যে, তাদের সরকার সঠিকভাবে কাজ করছে।

দুনিয়ার সব সব দেশেই যার আয় বেশি তাকে আয়কর দিতে হয় বেশি। তবে আয়করের বিস্তারিত বিবরণী গোপন রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন অনেকে। ট্রাম্পও সে কাজটিই করেছেন। কিন্তু ২০১৭ সালে আমেরিকান একটি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক তার পুরনো একটি আয়কর নথি ফাঁস করে দিয়ে হৈ চৈ ফেলে দেয়। এতে বলা হয়, ২০০৫ সালে ৩৮ মিলিয়ন ডলার আয়কর দিয়েছেন ট্রাম্প। সে বছর তিনি তার আয়কর বিবরণীতে আয়ের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি।

নথিতে দেখা যায়, ওই বছর ট্রাম্প যে পরিমাণ আয়কর দিয়েছেন সেটি তার মোট উপার্জনের ২৪ শতাংশ। সাধারণত আমেরিকানরা গড়ে যে পরিমাণ আয়কর দেন এটি তার চেয়ে বেশি। তবে আমেরিকার উচ্চ আয়ের লোকজন গড়ে ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ আয়কর দেন। কিন্তু ট্রাম্পের আয়কর তার তুলনায় কম।

মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক এমএসএনবিসি ট্রাম্পের ওই আয়কর বিবরণী প্রকাশের ঘটনায় তখন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে হোয়াইট হাউস। কারণ নির্বাচনি প্রচারণার সময় ট্রাম্প তার আয়কর বিবরণী প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

রেওয়াজ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে যারা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন, তারা সবসময় নিজেদের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করে থাকেন। ১৯৭৬ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা এ রীতি পালন করছেন। যদিও আইন অনুযায়ী এর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই, তবে ট্রাম্প প্রচলিত রেওয়াজ ভেঙেছেন। তবে চিঠি দিয়ে ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী চাওয়ার পর এবার এ ব্যাপারে রাজস্ব বিভাগকে সময় বেঁধে দিয়েছেন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট দলীয় আইনপ্রণেতারা।