বিগত প্রায় এক দশক ধরে উইকিলিকস-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র। বস্তুত, ২০১০-২০১১ সালে উইকিলিকস-এ মার্কিন সরকারের গোপন দলিল প্রকাশের পর থেকেই তার ওপর নাখোশ ওয়াশিংটন। মার্কিন সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা ব্র্যাডলি ম্যানিং সূত্র হিসেবে অ্যাসাঞ্জকে ওইসব দলিল সরবরাহ করেছিলেন। সে সময় দায়ের করা মামলায় অ্যাসাঞ্জকে চিহ্নিত করা হয়েছিল ঘটনার মন্ত্রণাদাতা হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের চোখে অ্যাসাঞ্জ এমন একজন হ্যাকার, যিনি তাদের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করেছেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছেন। ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করেছিল তার উইকিলিকস। ওই সব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধসম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরও ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়। কী ছিল সেইসব নথিতে?
অ্যাসাঞ্জ নথি ফাঁসের পর এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেই বলেছিলেন, ইরাক যুদ্ধের আগে থেকেই সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং সেটি এখনও চলছে। এবং এই দলিল ফাঁস করে দিয়ে সেই সত্যটিকেই মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন সেনারা এক লাখ নয় হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছে, যার মধ্যে ৬৬ হাজার হচ্ছে বেসামরিক নাগরিক। মার্কিন সেনাদের হাতে এত হতাহতের ঘটনা ঘটলেও সেসব চেপে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল পেন্টাগন।
উইকিলিকস-এ মার্কিন সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিং কর্তৃক ফাঁস করে দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে শত শত বেসামরিক নাগরিক হত্যা করেছে। ২০১০ সালে উইকিলিকস-এর ফাঁসকৃত তথ্যের মধ্যে ছিল একটি ভিডিও, যাতে দেখা গেছে ইরাকের বাগদাদে মার্কিন হেলিকপ্টার থেকে চালানো হামলায় কীভাবে বেসামরিক নাগরিকদের মরতে হয়েছে।