আগেই আত্মঘাতী হামলার সতর্কতা দিয়েছিল শ্রীলঙ্কার পুলিশ

রবিবারে সিরিজ বিস্ফোরণের দশ দিন আগেই আত্মঘাতী বোমা হামলার বিষয়ে দেশব্যাপী সতর্কর্তা জারি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার পুলিশ প্রধান। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ সংক্রান্ত এক নথি হাতে পাওয়ার দাবি করে জানিয়েছে প্রখ্যাত চার্চগুলিতে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা চলছে বলে সতর্ক করেছিলেন তিনি। তবে রবিবার ইস্টার সানডের দিনে চালানো হামলা আত্মঘাতী কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।noname

রবিবার খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় শ্রীলঙ্কায় তিনটি চার্চ ও তিনটি বিলাসবহুল হোটেলে ভয়াবহ সিরিজ বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৩৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৫০ জন। কলম্বোর ন্যাশনাল হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালটির পরিচালক ডা. অনিল জাসিংহে হতাহতের এই সংখ্যা জানিয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে বিদেশি পর্যটকেরাও থাকতে পারেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।

বার্তা সংস্থা এএফপির হাতে পাওয়া নথি অনুযায়ী গত ১১ এপ্রিলি শ্রীলঙ্কার পুলিশ প্রধান পুজুথ জয়াসুনদারা শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে একটি গোয়েন্দা সতর্কতা পাঠান। ওই সতর্কতায় চার্চে আত্মঘাতী হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়। ওই সতর্কতায় বলা হয়, 'একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে যে ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত (এনটিজে) প্রখ্যাত চার্চ এবং কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশন লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে'।

গত বছর বৌদ্ধ ধর্ম সংশ্লিষ্ট মূর্তি ভাঙচুরের পর শ্রীলঙ্কায় মনোযোগ কাড়ে উগ্রপন্থী মুসলিম গোষ্ঠী এনটিজে’র কার্যক্রম। তবে এখন পর্যন্ত রবিবারের হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনও গোষ্ঠী।

সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দেশ শ্রীলঙ্কার মাত্র ছয় শতাংশ মানুষ ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। দেশটির দুই নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী তামিল ও সিংহলিজ উভয়ের মধ্যেই এই ধর্মাবলম্বীদের দেখতে পাওয়া যায়। এক দশক আগে শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ অবসানের পর দেশটিতে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের মার্চে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সিংহলি সম্প্রদায়ের সদস্যরা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মসজিদ ও সম্পত্তিতে হামলা শুরু করলে দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।