হোদাইাদাহ বন্দর থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হুথিদের

জাতিসংঘ প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইয়েমেনের হোদাইদাহ বন্দর থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন হুথি। তবে সৌদি সমর্থিত ইয়েমেনি সরকারের এক মন্ত্রীর দাবি, হুথিদের এই পদক্ষেপ ‘লোক দেখানো’। এতে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করছে তারা।

s1.reutersmedia.net

ইয়েমেনের আমদানির বেশিরভাগ অংশ সম্পন্ন হয়ে থাকে এই বন্দর দিয়েই। এতদিন হুথি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এই বন্দরের ওপর অবরোধ আরোপ করে রেখেছিল সৌদি জোট। ফলে খাদ্য আমদানি সীমিত হয়ে পড়ে। ইয়েমেনের কোটি কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ এখনও এই সেনা প্রত্যাহার নিশ্চিত করেনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, খাদ্যশস্য মজুদ রাখা সালিফ অঞ্চলে হুথিদের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘের একটি দল। আরেকটি দল তেল মজুদ রাখা রাস ইসার দিকে রওনা হয়েছে।

ওই প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, অনেকগুলো ট্রাকে করে সশস্ত্র হুথি সেনারা হোদাইদাহ ত্যাগ করেছেন। সালিফের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে কোস্টগার্ড। জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও নজর রাখছেন সেখানে।

হুথি বিদ্রোহীরা জানান, শান্তি অর্জনে হোদাইদাহ চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছ তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। সৌদি কর্তৃপক্ষও যেন একই ভূমিকা পালন করে তা নিশ্চিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানায় তারা।

 ইয়েমেনি তথ্যমন্ত্রী মুয়াম্মার আল ইরিয়ানি বলেন, এটা লোক দেখানো। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনকে বিভ্রন্ত করা হবে। একগ্রুপ হুথি চলে গেলেও অন্য গ্রুপ কোস্টগার্ডের পোশাক পড়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছে।  

জাতিসংঘের পুনঃমোতায়েন সমন্বয় কমিটি জানায়, ১১ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত হুথি সেনারা প্রাথমিকভাবে সেনা প্রত্যাহার করবে।  

২০১৪ সালে ইয়েমেনে শুরু হয়েছিল গৃহযুদ্ধ। হুথি ও সালেহ জোট রাজধানী সানা দখল করলে দেশটির প্রেসিডেন্ট হাদি সৌদি আরবে নির্বাসনে যান। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেনে হামলা চালানো শুরু করে। সৌদি আরবের দাবি, হুদাইদা বন্দর দিয়ে প্রতিমাসে ৩ থেকে ৪ কোটি মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় করে, যা দিয়ে তারা ইরান থেকে অস্ত্র কেনে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষে ভেঙে পড়ে হুদাইদা বন্দরের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা। ইয়েমেনে দেখা দেয় চরম মানবিক দুর্যোগ। হুদাই বন্দরই ইয়েমেনে ত্রাণ সরবরাহের মূল মাধ্যম। ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে অন্তত ৮০ লাখ মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে পড়ে।