যুক্তরাজ্যে ধনকুবেরদের তালিকায় বাংলাদেশি পরিবারের উন্নতি

যুক্তরাজ্যের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ইকবাল আহমেদ ও তার পরিবারের উন্নতি হয়েছে। শীর্ষ ১ হাজার ধনী ব্যক্তির তালিকায় ইকবাল আহমেদের পরিবারের অবস্থান ৫৬৩-তম স্থানে। তাদের সম্পদের পরিমাণ ২১ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড, বাংলাদেশি টাকায় যা ২ হাজার ৩৩ লাখ কোটি টাকারও বেশি। গত বছর তাদের সম্পদের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড।

edd3561942106183515452ff07398355

প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে শীর্ষ এক হাজার ধনী ব্যক্তিদের নিয়ে এই তালিকা তৈরি করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস।  তালিকার জন্য সম্ভাব্য ধনীদের অর্থ, সম্পদ, শেয়ার বিবেচনায় নেওয়া হয়। ২০১৯ সালের তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত শ্রীচান্দ ও গোপীচান্দ হিন্দুজা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক হিন্দুজা গ্রুপের কর্ণধার তারা। তাদের সম্পদের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ১৩৫ কোটি পাউন্ড বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্সের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক দফতরের পরামর্শক বোর্ডের সদস্য ইকবাল আহমেদ। তার দুই ভাই বিলাল ও কামাল নিজেদের হিমায়িত খাবারের ব্যবসার সাফল্যের কারণে এই তালিকায় উঠে এসেছেন। ওল্ডহ্যামের ছোট্ট একটি মুদির দোকান থেকে সিমার্ক নামে বিশাল প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন তারা তিন ভাই, যা ইউরোপের বাজারে হিমায়িত খাবারের সবচেয়ে বড় রফতানিকারক। এছাড়া ম্যানচেস্টারের অভিজাত ভারমিলন রেস্তোরাঁ এবং সিনাবার নাইটক্লাবেরও মালিক ইকবাল।

ইকবালের জন্ম সিলেটের বালাগঞ্জে। ১৫ বছর বয়সেই যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান তিনি। শুরুতে চিংড়ি আমদানি করতেন তিনি। আর এখন তার জাহাজ, হোটেল, আবাসন, হাসপাতাল ও খাবারের ব্যবসা রয়েছে।

তালিকা তৈরিতে নিয়োজিত দলের সদস্য রবার্ট ওয়াটস বলেন, এই বছরটা মহাধনীদের জন্য দারুণ কেটেছে। আরও বিলিওনিয়ার তৈরি হয়েছে। এই ক্লাবে প্রবেশের সর্বনিম্ন যোগ্যতাও বেড়ে হয়েছে ১২০ মিলিয়ন ডলার। তবে কয়েকজন ধনী ব্যবসায়ী স্টক মার্কেট ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

ওয়াটস বলেন, ব্রেক্সিট, শেয়ার বাজারে ধস ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এই এক হাজার ধনকুবেরের অনেকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা ‘করবিগেডন’ আতঙ্কে ভুগছেন। এছাড়া থেরেসা মে’র ভুতুড়ে সরকার অনেক ব্যবসায়ীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে মার্কসবাদী এক নেতা সরকার গঠনের খুবই কাছাকাছি রয়েছেন। গত বছর শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ১২তম অবস্থানে থাকা বিখ্যাত উদ্ভাবক জেমস ডাইসন এবার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্য কারখানা সরিয়ে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাবেন।  

এই বছর উন্নতি করেছেন প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা। তালিকায় ঠাঁই হয়েছে বেশ কয়েকজন তরুণ উদ্যোক্তার। অনলাইন ফ্যাশন শপ, ডেটিং অ্যাপ ও ইউটিউব ভিডিও নির্মাণ করেও এই তালিকায় চলে এসেছেন বেশ কয়েকজন। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে খুচরো পুঁজিপতি ফিলিপ গ্রিনের বিলিওনিয়ার খেতাব হারানো। তার সম্পদ ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৯৫০ বিলিয়ন পাউন্ডে।