ইরানকে ট্রাম্পের নতুন হুমকি

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজায়রা সমুদ্রবন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে সন্দেহের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানবিরোধী হুমকির ধারাবাহিকতায় এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পবলেছেন, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিললে তার ফলাফল তেহরানের জন্য ভালো হবে নাতবে দেশটির বিরুদ্ধে তিনি কী পদক্ষেপ নেবেন, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি ট্রাম্প।

ট্রাম্প ও রুহানি
রবিবার (১২ মে) আমিরাতের ফুজাইরা বন্দরে চারটি বাণিজ্যিক জাহাজকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সোমবার সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায়, এরমধ্যে তাদের দুইটি তেল ট্যাঙ্কার রয়েছে। দুইটি সৌদি ট্যাঙ্কারের মধ্যে একটির অপরিশোধিত তেল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। এছাড়া বিস্ফোরণের লক্ষ্যবস্তু হওয়া চারটি জাহাজের একটি নরওয়েজিয়ান পতাকাবাহী ও একটি আমিরাতের। এ বিস্ফোরণকে ‘অন্তর্ঘাতমূলক হামলা’ বলে উল্লেখ করেছে আমিরাত কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনা তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহায়তাও চেয়েছে তারা। আমেরিকার একটি সামরিক দলের প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, ইরানের ইন্ধনেই ওই হামলা চালানো হয়েছে।

সোমবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এ বিস্ফোরণের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চান। ট্রাম্প ইরানি সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নে বলেন, তেমন ‘কিছু ঘটলে তাতে ইরান বাজে ধরনের সমস্যায় পড়বে। আমি আপনাদেরকে তা বলতে পারি। তারা আনন্দে থাকতে পারবে না।’

‘বাজে সমস্যা’ বলতে ট্রাম্প ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন; জানতে চাইলে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা নিজেরাই তা বের করে নিতে পারবেন। তারা (ইরান) জানে আমি কী বোঝাতে চেয়েছি।’

ইরানকে বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারটিকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে তেহরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সমালোচকদের আশঙ্কা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের মতো ট্রাম্প প্রশাসনে থাকা যুদ্ধবাজরা যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সঙ্গে সামরিক সংঘাতের প্রতি ঠেলে দিতে পারে।

সোমবার বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন পম্পেও। ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ইরানবিষয়ক বিশেষ দূত ব্রায়ান হুক বলেন, ‘দুই সৌদি ট্যাঙ্কারে হামলার খবর নিয়ে আলোচনা করেছি আমরা।’ নরেওয়েজিয়ান ট্যাঙ্কার ও আমিরাতি জাহাজে হামলা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

টাইম ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদন বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে বলা হয়েছে, সন্দেহজনক ওই ‘অন্তর্ঘাতের’ মাত্রা এখনও অস্পষ্ট থেকে গেছে। এক বিবৃতিতে সৌদি জ্বালানি মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ জানান, তাদের দুইটি তেলের ট্যাঙ্কার উল্লেখযোগ্য ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গেছে। এর মধ্যে অপরিশোধিত তেল নিয়ে একটি ট্যাঙ্কারের যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। আবুধাবির শাসক পরিবারের এক সদস্যের মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল স্কাই নিউজ আরাবিয়ার প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আল মারজোকাহ নামে যে সৌদি ট্যাঙ্কারকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করার কথা বলা হচ্ছে, তাতে দৃশ্যত কোনও ক্ষতির চিহ্ন নেই।