ক্যানসার ছড়ানোর অভিযোগে মনসান্টোর ২০০ কোটি ডলার জরিমানা

মনসান্টোর আগাছা নাশক ব্যবহার করে ক্যানসারে আক্রান্ত দম্পতিকে দুইশো কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতিপূরণ দিতে কোম্পানিটিকে নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার জুরি। সোমবার (১৩ মে) এ রায় দেওয়া হয়। রাউন্ডআপ নামক ওই স্প্রে নিয়ে এ পর্যন্ত তৃতীয় দফায় জরিমানার কবলে পড়লো মনসান্টো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাউন্ডআপ নামক আগাছা নাশক
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক কেমিক্যাল কোম্পানি মনসান্টোর বর্তমান মালিক জার্মান ফার্মাসিউটিক্যাল করপোরেশন বায়ের। এ কোম্পানির তৈরি আগাছা নাশক ব্যবহার করতেন আলভা ও আলবার্টা পিলিয়ড দম্পতি। তারা দুইজনই নন হজকিন্স লিম্ফোমা (এনএইচএল) ক্যানসারে ভুগছেন। সোমবার (১৩ মে) ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডের জুরি রায় দিয়েছে, এ দম্পতির ক্যানসার হওয়ার জন্য মনসান্টো কোম্পানি দায়ী। ক্ষতিপূরণ বাবদ আলভা ও আলবার্টা দুইজনের প্রত্যেককে ১০০ কোটি ডলার করে পরিশোধ করতে মনসান্টোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া খেসারত হিসেবে অতিরিক্ত সাড়ে পাঁচ কোটি ডলারেরও বেশি পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।

পিলিয়ড দম্পতির প্রত্যেকের বয়স ৭০ এর কোটায়। সান ফ্রান্সিসকো থেকে ৪০ মাইল পূর্বে লিভারমোরে থাকেন তারা। নিজেদের বাড়ি ও জায়গা-জমিতে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাউন্ডআপ স্প্রে ব্যবহার করেছেন এ দম্পতি। ২০১১ সালে আলভার হাড়ে এনএইচএল ক্যানসার শনাক্ত হয়। মেরুদণ্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় তা ছড়িয়ে পড়েছিল। আর ২০১৫ সালে এনএইচএল ব্রেন ক্যানসারে আক্রান্ত হন আলবার্টা।

বিশ্বজুড়ে আগাছা নাশক হিসেবে রাউন্ড আপ স্প্রে বিপুলভাবে ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নন হজকিন্স লিম্ফোমা (এনএইচএল) ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এ স্প্রের ভূমিকা রয়েছে। এর আগে গত বছর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া ডেওয়েনে জনসনকে ২৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার আদালত। আর এ বছর এডউয়িন হার্ডেমান নামে এক ব্যক্তিকে ৮ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। আর সোমবার (১৩ মে) পিলিয়ড দম্পতিকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।    

বায়ের ও মনসান্টো বার বারই দাবি করে আসছে রাউন্ডআপ স্প্রে ব্যবহার করা নিরাপদ এবং তা ক্যানসারের জন্য দায়ী নয়। তারা সবগুলো রায়ের বিরুদ্ধেই আপিল করছে।