লাইভস্ট্রিমিং প্রশ্নে কঠোর নীতি অনুসরণের ঘোষণা ফেসবুকের

নিউ জিল্যান্ডের মসজিদে বন্দুকধারীর হামলার পর তুমুল সমালোচনার মুখে লাইভস্ট্রিমিং সংক্রান্ত নিয়মাবলী কঠোর করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। মঙ্গলবার (১৫ মে) কোম্পানিটি এ ঘোষণা দিয়েছে। অনলাইন সহিংসতা ঠেকানোর প্রশ্নে বিশ্বনেতারা যখন বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন তখনই কড়া নীতি আরোপের কথা জানালো ফেসবুক। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতীকী ছবি
মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদ। তাণ্ডবের বলি হয় অর্ধশত মানুষ। হামলাটি বিশ্ববাসীর সামনে নতুন এক বাস্তবতা হাজির করে। প্রথমবারের মতো একটি হামলার লাইভ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয় এবং তা ভাইরাল হয়ে যায়। এতে আবারও সামনে আসে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকার প্রশ্ন। ঘটনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন জানান,তিনি ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘যেসব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভিডিওগুলো ছড়িয়েছে শেষ পর্যন্ত তাদেরই দায় এগুলো সরানোর। আমি মনে করি তাদেরকে আরও কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।’

ঘটনার দুই মাসের মাথায় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ফেসবুক জানিয়েছে, তারা লাইভস্ট্রিমিং ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের জন্য ‘ওয়ান-স্ট্রাইক’ নীতি প্রণয়ন করছে। এর আওতায় কোনও গ্রাহক যদি সাইটের যেকোনও জায়গায় কোম্পানিটির গুরুত্বপূর্ণ নীতি ভঙ্গ করে এবং শাস্তির আওতায় থাকে তবে সে গ্রাহকের জন্য ফেসবুক লাইভ ব্যবহারের সুযোগ সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। প্রথম দফায় অপরাধ সংঘটনকারীদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লাইভ ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।

ওয়ান স্ট্রাইক নীতির আওতায় অপরাধ বিবেচনার আওতাও বাড়াচ্ছে ফেসবুক। তবে নীতিমালার আওতায় কোন কোন অপরাধগুলোকে আমলে নেওয়া হবে এবং কত সময় ধরে অপরাধের সাজা বজায় থাকবে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি ফেসবুক। কোম্পানিটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, নতুন নিয়মের আওতায় কোনও বন্দুকধারীর পক্ষে তার অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভ স্ট্রিমিং ব্যবহার করা সম্ভব হবে না।

ফেসবুক বলছে, ভবিষ্যতে সাইটের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে কড়াকড়ি বিস্তৃত করার কথা ভাবা হচ্ছে।

ফেসবুকের নতুন এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। তিনি মনে করেন, ‘ক্রাইস্টচার্চ কল’ নামক উদ্যোগে সাড়া দিয়েছে ফেসবুক। নিউ জিল্যান্ডের মসজিদে হামলার পর অনলাইন সহিংসতা রুখতে ‘ক্রাইস্টচার্চ কল’ নামক ওই উদ্যোগ শুরু করেছিলেন জাসিন্ডা। অনলাইনে সন্ত্রাসী ও সহিংসতামূলক কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে এ পরিকল্পনা হাতে নেন তিনি।  বুধবার (১৫ মে) প্যারিসে ৭ দেশের মন্ত্রিপর্যায়ের প্রযুক্তি বিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দেবে গুগল,ফেসবকু,মাইক্রোসফট ও টুইটারের কর্মকর্তারা। সেখানেই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরবেন জাসিন্ডা। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ এই সম্মেলনে থাকবেন না বলে জানা গেছে।