গান্ধীকে পাকিস্তানের জাতির পিতা বলা সেই বিজেপি মুখপাত্র বরখাস্ত

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মহাত্মা গান্ধীকে পাকিস্তানের জাতির পিতা অভিহিত করে দলের পদ হারিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক মুখপাত্র। শুক্রবার মধ্যপ্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র অনিল সৌমিত্র’র প্রাথমিক সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে জানিয়েছে ভারতের সংবাদপত্র বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। এর আগে এক ফেসবুক পোস্টে মহাত্মা গান্ধীকে পাকিস্তানের জাতির পিতা বলে উল্লেখ করেন সৌমিত্র।

মধ্যপ্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র অনিল সৌমিত্র

ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামে অহিংস আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে ভারতের জাতির পিতা হিসেবে সম্মানিত হয়ে থাকেন কংগ্রেস নেতা মহাত্মা গান্ধী। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি নথুরাম গডসে নামে এক উগ্রবাদী হিন্দু আততায়ীর গুলিতে নিহত হন তিনি। সম্প্রতি ভারতের এক জনপ্রিয় অভিনেতা ও রাজনৈতিক নেতা কমল হাসান নথুরামকে ভারতের প্রথম সন্ত্রাসী আখ্যা দেন। এর জবাবে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির নেতা প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর নথুরামকে দেশপ্রেমিক আখ্যা দিয়ে বলেন, যারা তাকে সন্ত্রাসবাদী বলছেন, ভোটের ফল প্রকাশের পর তাদের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’  পরে বিতর্কের মুখে নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চান লোকসভা নির্বাচনে ভুপাল থেকে দাড়ানো এই বিজেপি প্রার্থী।

এই বিতর্কের মধ্যে শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে অনিল সৌমিত্র লেখেন, ‘মহাত্মা গান্ধী পাকিস্তানেরও জাতির পিতা ছিলেন। তার মতো কোটি কোটি সন্তান রয়েছে ভারতের, কেউ যোগ্য, কেউ অযোগ্য’। এমন মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের সৌমিত্র বলেন, পরিচিত বা অপিরিচিত যে কারোরই ভারতের জাতির পিতা হওয়ার সম্মান থাকতে পারে। সেকারণে তিনি ভারতের জাতির পিতা হতে পারেন, কিন্তু তিনি পাকিস্তানেরও জাতির পিতা। ভারতীয় মাতৃভূমির সন্তান হওয়ার গৌরব প্রত্যেকেরই আছে।

সৌমিত্র’র এই মন্তব্যের কিছু সময় পরেই বিজেপির কেন্দ্রীয় মুখপাত্র হিতেশ বাজপেয়ী তাকে বহিষ্কারের খবর নিশ্চিত করেন। হিতেশ জানান, সৌমিত্রকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাকেশ সিং। বহিষ্কারের কারণ জানতে চাইলে বিজেপি নেতা হিতেশ বলেন, মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে দেশের জনগণের আবেগের সম্পর্ক রয়েছে। সেকারণে সৌমিত্র’র মন্তব্যের কারণে আগামী ১৯ মে ভারতের সর্বশেষ ধাপের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে। আর এজন্যই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার এক টুইট বার্তায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, দলের আদর্শ মেনে মহাত্মা গান্ধীর সমালোচনা করেননি বিজেপি নেতারা। তিনি জানান, এ সংক্রান্ত বক্তব্যের মাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সংশ্লিষ্ট নেতাদের ১০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।