নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ নাকচ প্রণব মুখার্জীর

বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকার অভিযোগ আনলেও তা মানতে নারাজ সাবেক রাষ্ট্রপতি ও কংগ্রেস নেতা প্রণব মুখার্জী। তিনি মনে করছেন, নির্বাচন ‘যথাযথভাবে’ সম্পন্ন হয়েছে। সমালোচকদের ইঙ্গিত করে তিনি প্রচলিত একটি প্রবাদও টেনে এনেছেন। বলেছেন, ‘নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা হয়।’

প্রণব মুখার্জী

সাত দফায় অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে ১৯ মে। গণনা থেকে শুরু করে ফল ঘোষণার কাজ এখনও বাকি। এরই মধ্যে কমিশনের বিরুদ্ধে ইভিএমের অস্বচ্ছতা ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে না পারার ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। কমিশনকে পক্ষপাতদুষ্ট আখ্যাও দিয়েছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেসসহ বিভিন্ন বিরোধী দলের এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন প্রণব মুখার্জী।

সোমবার (২০ মে) নয়াদিল্লিতে এনডিটিভির এডিটোরিয়াল ডিরেক্টর সোনিয়া সিং-এর লেখা ‘ডিফাইনিং ইন্ডিয়া থ্রো দেয়ার আইজ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রণব। সে সময় নির্বাচন কমিশনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে চাই, তবে আমাদের মাথায় রাখতে হবে এদেশে প্রতিষ্ঠানগুলো ভালোভাবে কাজ করছে। আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যদি সাফল্য পেয়ে থাকে তাহলে তার সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে নির্বাচন নির্বিঘ্নে আয়োজন করতে পারার বিষয়টি। সে ব্যাপারে সুকুমার সেন থেকে শুরু করে এখনকার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সকলেরই ভূমিকা রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই নির্বাহীভাবে নিয়োগ পেয়েছেন এবং নিজেদের দায়িত্ব ঠিক করে পালন করেছেন/করছেন। আপনারা তাদের নামে উল্টাপাল্টা বলতে পারেন না। নিখুঁতভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ 

প্রণব আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি নাচতে না জানা মানুষরাই কেবল উঠানকে বাঁকা বলে দোষ দেয়। ভালো কাজ জানা মানুষরাই বোঝেন কীভাবে যন্ত্রের ব্যবহার করতে হবে।’ রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন প্রণব। ইউপিএ সরকারের সময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ এ নেতা ২০১২ সালে দেশের ১৩তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ইতি টানেন রাজনৈতিক জীবনের। 

প্রণব এমন সময়ে নির্বাচন কমিশন নিয়ে মন্তব্য করলেন যখন কংগ্রেস প্রধান রাহুল গান্ধী ও অন্য বিরোধী নেতারা বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদির পক্ষে কাজ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দোষারোপ করছে। নির্বাচন কমিশনের একাধিক পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে বিরোধী দলের প্রায় নেতাই প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। ভোট চলার মাঝেই কমিশন যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথে সফর করার সুযোগ দিয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি একাধিকবার আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ উঠলেও প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ’র বিরুদ্ধে কমিশন কোনও রকম ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছে বিরোধীরা।