দলে আমূল পরিবর্তন আনতে রাহুলকে কংগ্রেস নেতাদের আহ্বান

ভারতের কংগ্রেস পার্টির অভ্যন্তরে আমূল পরিবর্তন আনার জন্য সভাপতি রাহুল গান্ধীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা। ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে দলের শোচনীয় পরাজয়ের পর শনিবার (২৫ মে) কমিটির বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়। তবে এদিন সভাপতি হিসেবে রাহুলের পদত্যাগের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা।

মা সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে রাহুল গান্ধী

সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শোচনীয় পরাজয় হয়েছে রাহুলের দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ববর্তী লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার আসন সংখ্যা আরও বাড়িয়েছে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি। গতবার এককভাবে ২৮২ আসন পাওয়া এ দলটি এবার পেয়েছে ৩০৩টি আসন। আর কংগ্রেস পার্টি আগেরবারের চেয়ে ৮টি আসন বেশি পেলেও পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার মতো প্রয়োজনীয় আসন পূরণ করতে পারেনি। পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার জন্য একটি দলকে মোট আসনের অন্তত ১০ ভাগ আসনে জিততে হয়।

দ্বিতীয়বারের মতো দলের এ শোচনীয় পরাজয়ের পর শনিবার বৈঠক করেছে কংগ্রেস পার্টির কার্যনির্বাহী কমিটি। এদিন সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন রাহুল। তবে তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। বরং সভাপতি পদে বহাল থেকে দলের ভেতরে আমূল পরিবর্তন আনার জন্য রাহুলের প্রতি আহ্বান জানান ওয়ার্কিং কমিটির নেতারা।

কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের পর কংগ্রেস পার্টির মুখপাত্র রণদ্বীপ সুরজেওয়ালা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ চ্যালেঞ্জিং সময়ে দল পরিচালনার জন্য আমাদের রাহুল গান্ধীকে প্রয়োজন। নির্বাচনে পরাজয়ের বিষয়টিকে গুরুতরভাবে খতিয়ে দেখা হবে। কংগ্রেস পার্টির সর্বস্তরে আমূল ও গঠনমূলক পরিবর্তন আনার জন্য রাহুল গান্ধীকে আহ্বান জানানো হয়েছে।’

কংগ্রেস পার্টির নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘হার-জিত থাকে। কিন্তু সামনে থেকে লড়াই করেছেন রাহুল। তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। মানুষের মনে বিশ্বাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। হারের দায় স্বীকার করে ইস্তফা দিতে চান তিনি। কিন্তু এই প্রথম দেখলাম,  সর্বসম্মতভাবে নেতারা আপত্তি করলেন। সবাই মিলে সমস্বরে ইস্তফার বিরোধিতা করছেন, এমনটা কখনও দেখিনি। রাহুলকে বলেছি, আপনার নেতৃত্বে সবাই কাজ করবেন। আমরা অনুরোধ করছি, নিজের মতো করে আপনি দলে পরিবর্তন করতে পারেন।’  

অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহেশ রঙ্গরাজন মনে করেন, কংগ্রেস পার্টিকে পরাজয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে এবং সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আরব নিউজকে তিনি বলেন, ‘১৯৮০-এর দশকে বিজেপি যেমন করে নিজেদের সংকট শনাক্ত করেছিল, কংগ্রেস কী তেমনটা করতে পারবে? দলটিতে অনেক সংকট রয়েছে। তাদের তা স্বীকার করতে হবে এবং এসব সংকট মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে হবে।’