ভারতীয় বাহিনীর বিধ্বস্ত বিমানের যাত্রীদের খোঁজে অভিযান

নিখোঁজ হওয়ার আটদিনের মাথায় মঙ্গলবার (১১ জুন) ভারতীয় বিমান বাহিনীর এন-৩২ বিমানের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিললেও এখনও যাত্রীরা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে বুধবার (১২ জুন) সকাল থেকে অরুনাচল প্রদেশের দুর্গম এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে।

দুর্গম এলাকায় অভিযান চলছে
গত ৩ জুন দুপুর ১২টা ২৫ মিনিট নাগাদ আসামের জোরহাট থেকে অরুণাচল প্রদেশের মেচুকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল ভারতীয় বিমান বাহিনীর এএন-৩২ বিমান। দুপুর ১টার সময় শেষবার যোগাযোগ করা যায় বিমানটির সঙ্গে। এরপরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিমানে ৮ জন ক্রু সদস্য ও ৫ জন যাত্রী ছিলেন। বিমান বাহিনীর সি-১৩০জে ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্র্যাফ্ট, সুখোই সু-৩০ লড়াকু বিমান, নেভি-পি ৮-১ সার্চ এয়ারক্র্যাফ্টের পাশাপাশি বিমান ও সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার তন্নতন্ন করে খুঁজে চলেছিল বিমানটিকে। পাশাপাশি ইসরোর উপগ্রহ ও চালকহীন আকাশযানের সাহায্যেও তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। অবশেষে মঙ্গলবার অরুণাচল প্রদেশের সিংয়াম জেলার পায়ুম সার্কেলে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। বিমানবাহিনীর একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ১২,০০০ ফুট উপর থেকে নিখোঁজ বিমানটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পায়। আর একদিন পর বুধবার (১২ জুন) থেকে শুরু হয়েছে উদ্ধার অভিযান।

বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনীর সদস্য এবং পর্বতারোহীদের সমন্বয়ে গঠিত দল বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে অভিযান শুরু করেছে। যাত্রীদের মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি কেউ জীবিত আছেন কিনা তারও সন্ধান চালানো হচ্ছে। যে এলাকায় বিমানটির সন্ধান পাওয়া গেছে তা অত্যন্ত দুর্গম। সেই সঙ্গে খারাপ আবহাওয়া বিরাজ করছে।

হেলিকপ্টার থেকে ধারণকৃত এক ভিডিওর উল্লেখ করে এনডিটিভি জানিয়েছে, অভিযানস্থলটির আকাশ খুব মেঘাচ্ছন্ন এবং উপত্যকাগুলো খুব সরু। সব মিলে সেখানে অভিযান পরিচালনার কাজটি খুব চ্যালেঞ্জিং।

অরুণাচল প্রদেশ সরকারের এক কর্মকর্তা জানান, অভিযান চালাতে পশ্চিম সিয়াং-এর কায়িআং এলাকায় একটি ঘাঁটি স্থাপন করা হয়েছে। একজন চিকিৎসক এবং অন্য জরুরি সেবাগুলো সেখানে স্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ব্যাক আপ দলকেও।

এএন-৩২ বিমানটি রাশিয়ায় তৈরি। এতে দুইটি ইঞ্জিন থাকে। ভারতীয় বায়ুসেনা গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই ধরনের বিমান ব্যবহার করে। বছর তিনেক আগে ২০১৬ সালে একটি এ এন ৩২ বিমান বঙ্গোপসাগরের উপর নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। চেন্নাই থেকে ওড়ার পর তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেই বিমানটিকে খুঁজে বের করতে ভারতীয় বিমান বাহিনী নিজেদের সবচেয়ে বড় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল। দীর্ঘদিন ধরে তল্লাশি চলে। কিন্তু কোথাও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বিমানে থাকা ২৯ জনকেই মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়।