ওমান উপসাগরে তেলবাহী দুই ট্যাংকারে বিস্ফোরণ

ওমান উপসাগরে দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে বিস্ফোরণের পর সেগুলোতে আগুন ধরে যায়। এরইমধ্যে দুই ট্যাংকার থেকে ৪৪ জন ক্রু-কে উদ্ধার করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। তবে বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী বলছে, তারা বিস্ফোরণস্থল থেকে দুটি বিপদ সংকেত পেয়েছিলো। সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে চারটি তেল ট্যাংকারে হামলার এক মাসের মাথায় নতুন করে ট্যাংকারে বিস্ফোরণ হলো।

গত ১২ মে আমিরাত উপকূলে হামলার শিকার হওয়া ট্যাং্কারগুলোর একটি

ট্যাংকার দুটির একটি মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার এবং অপরটি পানামার পতাকাবাহী কোকুকা কারেজিয়াস। বাহরাইনভিত্তিক ফিফথ ফ্লিটের জোশ ফ্রে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অঞ্চলটিতে নিয়োজিত মার্কিন নৌবাহিনী দুটি আলাদা বিপদ সংকেত পেয়েছিল। ভোর ৬টা ১২ মিনিটের দিকে প্রথমটি এবং ৭টার দিকে দ্বিতীয় সংকেতটি পাওয়া গিয়েছিল।’

তাইওয়ানের রাষ্ট্রীয় তেল শোধনাগার কোম্পানি সিপিসি করপোরেশনের মুখপাত্র উ আই ফাং ফ্রন্ট আলটেয়ার পরিচালনা করে থাকে। কোম্পানিটি জানায়, ট্যাংকারটিতে ৭৫ হাজার টন নাফথা তেল ছিল। এটিতে টর্পেডো (জাহাজ ধ্বংস করার বিস্ফোরক) দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। উ আই ফাং আরও জানান, ট্যাংকারে থাকা সব ক্রু-কে উদ্ধার করা হয়েছে। নরওয়ের ফার্ম ফ্রন্টলাইন হলো জাহাজটির মালিক।

পানামার পতাকাবাহী কোকুয়া কারেজিয়াস-এর অপারেটর বিএসএম শিপ ম্যানেজমেন্ট জানিয়েছে, তাদের ট্যাংকার থেকেও ক্রুদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্য একটি জাহাজের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হয়। ট্যাংকারটিতে মিথানল ছিল এবং তা ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি নেই। বর্তমানে ট্যাংকারটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরা থেকে প্রায় ৮০ মাইল এবং ইরান থেকে ১৬ মাইল দূরত্বে অবস্থান করছে।

এর আগে গত ১২ মে আমিরাতের ফুজাইরা বন্দরে চারটি বাণিজ্যিক জাহাজকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তখন সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায়, এরমধ্যে তাদের দুটি তেল ট্যাংকার রয়েছে। সেগুলো ‘উল্লেখজনকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়া বিস্ফোরণের লক্ষ্যবস্তু হওয়া চারটি জাহাজের একটি নরওয়েজিয়ান পতাকাবাহী ও একটি আমিরাতের। এ বিস্ফোরণকে ‘অন্তর্ঘাতমূলক হামলা’ বলে উল্লেখ করে আমিরাত কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত দুই সৌদি ট্যাংকারের মধ্যে একটির অপরিশোধিত তেল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানের ইন্ধনেই ওই হামলা চালানো হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এ ঘটনায় তদন্তের দাবি জানায় তেহরান।