বহুমাত্রিক হতে পারে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক: মেলবোর্নের সেমিনারে বিশ্লেষকদের মত

বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার অংশীদারিত্বের সম্পর্ক বহুমাত্রিক হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, প্রতিরক্ষা  ও কৌশলগত সহায়তা ছাড়াও নানা ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব বিস্তৃত হতে পারে বলে মত দিয়েছেন দুই দেশের বিশ্লেষকেরা। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ল স্কুলে আয়োজিত দুই অধিবেশনের সেমিনারে এসব মতামত উঠে এসেছে। গত ১২ জুন (বুধবার) এই সেমিনার যৌথভাবে আয়োজন করে অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ হাই কমিশন ও মেলবোর্নভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডেভেলপমেন্ট।অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ল স্কুলে আয়োজিত হয় বাংলাদেশ বিষয়ক সেমিনার

সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান। সেমিনারের প্রথম অধিবেশনে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় দুই দেশের বৃহত্তর ভূমিকা ও অংশীদারিত্বের প্রত্যাশা বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন বিশ্লেষকরা। এই অধিবেশনে বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে উদীয়মান মধ্যবর্তী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার। আর দ্বিতীয় অধিবেশনে জবরদস্তিমূলক অভিবাসনের কারণে এই অঞ্চলের জন্য উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ  এবং চলমান রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের মাধ্যমে পুরো অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা এড়াতে এই অঞ্চলের দেশগুলোর আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে করণীয় বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর তুলনায় দ্রুত ও প্রাণবন্ত অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি অর্জনকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেন হাই কমিশনার সুফিউর রহমান। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও মধ্যবর্তী শক্তি হিসেবে উত্থানের কারণ অনুধাবণে অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের আমন্ত্রণ জানান তিনি। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র চিহ্নিত করতেও গবেষকদের আহ্বান জানান তিনি। সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের হাই কমিশনার সুফিউর রহমান

দ্বিতীয় অধিবেশনের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল রোহিঙ্গা ইস্যু। মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বিতাড়িত এই জনগোষ্ঠীর সংকট সমাধানে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত পোষণ করেন আলোচকেরা।

সেমিনারের দুটি অধিবেশনে যোগ দেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র  ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মেলবোর্ন ও ক্যানবেরার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, গবেষক ও বাণিজ্য সংস্থার অংশীজনেরা। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিগত এক দশক ধরে বাংলাদেশের তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন যে নতুন প্রত্যাশা ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে বহুমাত্রিক সম্পর্কের সম্ভাবনা তৈরি করেছে তা নিয়ে আলোচনা করেন তারা। সেমিনারে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন নিউ জিল্যান্ডের সাবেক মন্ত্রী এবং রাখাইন রাজ্য বিষয়ক জাতিসংঘ উপদেষ্টা ক্রিস কার্টার, জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থার সাবেক সহকারী হাই কমিশনার ও মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের ফেলো এরিকা ফেলার, সেন্টার ফর পলিসি ডেভেলপমেন্টের প্রধান নির্বাহী ট্রাভার্স ম্যাকলিওড, অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব অ্যান্ড্রু কলিন্স ও স্টিভ স্কট।