কাশ্মিরে আবারও হামলার আশঙ্কা, ভারতকে সতর্ক করলো পাকিস্তান

কাশ্মিরের পুলওয়ামার আত্মঘাতী হামলার মতো করে ভারতে আবারও বড় ধরনের হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে পাকিস্তান। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইসলামাবাদ দাবি করেছে, বালাকোটে হামলার জবাব দিতে আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ভর্তি গাড়ি ব্যবহার করে আবারও কাশ্মিরে এই হামলা চালানো হতে পারে। সেখানকার তীর্থস্থান অমরনাথ গুহায় পুণ্যার্থীদের যাত্রা শুরুর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে পাকিস্তান হামলার আশঙ্কার কথা জানালো।

এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মিরের পুলওয়ামায় বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর বহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহম্মদ ওই হামলার দায় স্বীকার করে। এ হামলার জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বালাকোটে হামলা চালায় ভারতীয় বিমান। বালাকোটে হামলার জবাবে কাশ্মিরে আবারও হামলা হতে পারে বলে ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশনকে জানিয়েছে পাকিস্তান। শীর্ষ সূত্র থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য জানানো হয়নি।

পাকিস্তান এমন এক সময়ে কাশ্মিরে হামলার আশঙ্কার কথা জানালো, যখন সেখানকার অমরনাথ মন্দির পরিদর্শনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। বেশিরভাগ সময় ওই মন্দিরের গুহা এলাকা বরফে ঢাকা থাকে। আর বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে মন্দিরটি তীর্থযাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ওই সময়ে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী ওই মন্দির পরিদর্শন করে থাকেন। এবার ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মন্দির খোলা রাখার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময়ে লাখ লাখ তীর্থযাত্রী মন্দির পরিদর্শন করবেন। দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে বিস্তৃত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মোট ১৮টি মহা পীঠস্থানের অন্যতম অমরনাথ। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, কাশ্মিরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী থেকে ১৪১ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি গুহায় অবস্থিত মন্দিরটিতে দেবী পার্বতীর দেহাবশেষ রয়েছে। অমরনাথ যাত্রা শুরুর আগে কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে পাকিস্তান বলছে, গত মাসে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত জাকির মুসার হত্যার বদলা নিতে এই হামলা চালানো হতে পারে। কাশ্মিরি স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিন থেকে ২০১৭ সালে মে মাসে বেরিয়ে গিয়ে জাকির মুসা আল কায়েদা সমর্থিত আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ নামে আরেকটি গোষ্ঠী গড়ে তোলেন। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় জইশ-ই-মোহাম্মদ ও আইএসআই-এর হিটলিস্টে ছিলেন জাকির মুসা। ওই সূত্রের দাবি, মুসা নিহতের পর এ হত্যার বদলা নিতে চায় তার এক আত্মীয়। বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জম্মু ও কাশ্মিরের জামাত-ই-ইসলামির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে ওই আত্মীয়ের।