মুরসির মৃত্যু নিয়ে ‘রাজনীতিকরণ’ করছে জাতিসংঘ: মিসর

মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যু নিয়ে জাতিসংঘ ‘রাজনীতিকরণ’ করছে বলে অভিযোগ তুলেছে দেশটির সরকার। তাদের দাবি, মুরসির ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ হয়েছে। জাতিসংঘের অভিযোগ একদমই ভিত্তিহীন।

5d0a07b9a7b32সেনাবাহিনী কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই মিসরীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন মুরসি। সোমবার (১৭ জুন) আদালতের এজলাসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। মঙ্গলবার এ ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

আর এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের এ পদক্ষেপের ‘নিন্দা’ জানিয়েছেন মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমেদ হাফেজ। তার দাবি, ‘এটা স্বাভাবিক মৃত্যু ছিলো।’ তিনি বলেন, মিসরের রাষ্ট্রীয় সংগঠন ও বিচারিক বিশুদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে জাতিসংঘ। কোনোরকম ষড়যন্ত্রের অভিযোগ একদম ভিত্তিহীন।

গত ৭ মে আদালতে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মোহাম্মদ মুরসি। বলেছিলেন, তার জীবন হুমকির মুখে। তার পরিবারও অনেক দিন ধরে কারাগারে কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে আহ্বান জানানো হয়েছিলো মিসর যেন তাদের কারাবন্দিদের সঙ্গে ভালো আচরণ করে। এক বিৃবতিতে সংস্থাটি জানায়, আটকাবস্থায় মুরসিকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে কিনা, পরিবার ও আইনজীবীদের সঙ্গে তার যোগাযোগের যথেষ্ট সুযোগ ছিল কিনা- এসব বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এছাড়া তাকে অনেকদিন ধরেই নির্জন কারাবাসে রাখার অভিযোগও রয়েছে।

মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থিত ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি) নেতা মুরসি দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট। ২০১১ সালে আরব বসন্তের হাত ধরে আসা এক গণঅভ্যুত্থানে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক হোসনি মোবারক পদচ্যুত হন। পরের বছরেই নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেন মুরসি। তামারুদ’ নামের একটি গোষ্ঠীর মাধ্যমে সাজানো এক বিক্ষোভ আয়োজন করে ২০১৩ সালে সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। মুরসির হাতে সেনাপ্রধান হওয়া আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ক্ষমতায় বসেন।
মুরসিকে গ্রেফতার করে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম ও কাতারের কাছে রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আদালতের মুখোমুখি করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের কাছে তথ্য পাচারেরও অভিযোগ আনা হয়। ২০১৬ সালের জুনে তথ্য পাচারের মামলায় মুরসিকে দোষী সাব্যস্ত করে নিম্ন আদালত। দেশের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে মুরসিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।