এবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ মার্কিন লেখিকার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নতুন করে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ই জিন ক্যারল নামে এক মার্কিন লেখিকা। নিজের লেখা একটি বইয়ে ২৩ বছর আগের সে ঘটনাকে সামনে নিয়ে এসেছেন তিনি। ওই লেখিকা দাবি করেছেন, প্রায় দুই দশক আগে একটি শপিং মলের ড্রেসিং রুমে তার ওপর যৌন নিপীড়ন চালান ট্রাম্প। তবে ক্যারলের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করে তা নাকচ করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার দাবি ই জিন ক্যারল নামের ওই লেখিকার সঙ্গে তার জীবনে দেখাই হয়নি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

ক্যারল ও ট্রাম্প
নারী স্বার্থরক্ষায় এবং নারী অধিকার নিয়ে মার্কিন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখির জন্য জনপ্রিয় ক্যারল। নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে তার অনেক লেখা বিভিন্ন সময়ে সমাদৃত হয়েছে। বর্তমানে ৭৫ বছর বয়স ক্যারলের। তার লেখা বই ‘হোয়াট ডু উই নিড মেন ফর? অ্যা মোডেস্ট প্রপোজাল’ প্রকাশ হতে যাচ্ছে। সেখানে তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন। প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা বইটির সারাংশ প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিন।

ক্যারলের দাবি অনুযায়ী, ঘটনাটি ১৯৯৫ সালের শেষের দিকের বা পরের বছরের শুরুর দিকের। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ওই শপিং মলে একটি টিভি শো-এর সঞ্চালনা করছিলেন তিনি। শো শেষ হওয়ার পর শপিং মল বন্ধ হওয়ার মুখে তিনি ট্রাম্পের কাছে যেতেই ট্রাম্প তাকে চিনতে পারেন। তাকে বলেন, ‘আপনি তো সেই উপদেশ দেওয়া নারী।’

ক্যারল বলেছেন, কোনও এক নারীর জন্য উপহার কিনতে সাহায্য করার জন্য তার কাছে আর্জি জানান ট্রাম্প। তার পর ক্যারল সেই নারীর বয়স জিজ্ঞেস করেন। ট্রাম্প তা না জানিয়ে উল্টো ক্যারলের বয়স জিজ্ঞেস করেন। ক্যারল নিজের বয়স ৫২ বছর বলার পর ট্রাম্প তাকে বলেন, ‘আপনি অনেকটাই বয়স্ক।’ সেই সময় ট্রাম্পের বয়স ছিল ৪৯ বছর।

ক্যারলের দাবি, উল্লিখিত নারীর উপহার কেনার নাম করে ট্রাম্প তাকে মলের উপরের তলায় একটি অন্তর্বাসের দোকানে নিয়ে যান। সেই সময় যেহেতু শপিং মল বন্ধ হচ্ছিল, তাই ওই এলাকায় কোনও লোকজন ছিল না। ট্রাম্প সেই সময় কয়েকটি অন্তর্বাস ও একটি স্বচ্ছ গাউন নেন এবং ক্যারলকে তা পরে দেখাতে বলেন। তাতে অস্বীকৃতি জানান ওই লেখিকা। ক্যারলের অভিযোগ, এরপর তিন মিনিট ধরে তার ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন ট্রাম্প।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দৃঢ়ভাবে ওই ঘটনার কথা অস্বীকার করে দাবি করেছেন, এটা ‘ফেক নিউজ’। একই সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সেই সময় শপিং মলের কোনও ফুটেজ নেই বা মলের কোনও কর্মী সাক্ষী নেই?’ শুক্রবার (২১ জুন) এক বিবৃতিতে দিয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘জীবনে কখনও ওই নারীর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়নি।’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, ক্যারল নতুন একটা বই বিক্রির চেষ্টা করছেন। সেই উদ্দেশ্যেই এই সব রটাচ্ছেন।  

নিজের অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে সেই সময় দুই বন্ধুর কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন ক্যারল। নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সে দুই বান্ধবী স্বীকার করেছেন যে, ক্যারল সেই সময় তাদেরকে ঘটনার কথা বলেছিলেন।

উল্লেখ্য, সেই নির্বাচনি প্রচারণার সময় থেকেই ধারাবাহিক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, নারীবিদ্বেষী বিভিন্ন মন্তব্য এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ বিভিন্ন নারীর বিরুদ্ধে যৌন-নিপীড়নমূলক ভাষা ব্যবহারের নজির দেখা যায় ট্রাম্পের মধ্যে। সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে একের পর এক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলে যাচ্ছেন নারীরা।