এবার মুরসির জন্মস্থানে মিসরীয় সেনাবাহিনীর হানা

এবার প্রয়াত মিসরীয় প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির জন্মস্থানে হানা দিয়েছে মিসরের সেনাবাহিনী। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, আল-এদওয়াহ গ্রামে হানা দিয়ে সেখানকার বহু মানুষকে আটক করেছে সেনারা।

noname

সেনাবাহিনী কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই মিসরীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন মুরসি। গত ৭ মে তিনি আদালতে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, তার জীবন হুমকির মুখে। ১৭ জুন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, ‘আদালতের এজলাসে হঠাৎ পড়ে গিয়ে’ মুরসির মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মুরসির মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ ও স্বাধীন তদন্ত দাবি করেছে।

মিসরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি ২০১৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে কারাবন্দি করেন। তখন থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুরসি কারাগারে বন্দি ছিলেন। আল জাজিরা জানিয়েছে, মুরসির মৃত্যুর পর জন্মস্থান আল-এদওয়াহ গ্রামটি এখনও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। মুরসির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার গ্রামের লোকজন যাতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করতে না পারে সেজন্যই সেখানে সেনাবাহিনী বল প্রয়োগ করতে শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

মিসরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে গত ছয় বছরের বেশিরভাগ সময় নির্জন সেলে বন্দি রাখা হয়। এছাড়া তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়নি বলে তার পরিবার ও আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন। মুরসি নিজে আদালতে এর আগের শুনানির দিন বলেছিলেন, চিকিৎসার অভাবে তার শরীরের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে এবং তার জীবন হুমকির মুখে। কিন্তু সিসি’র সাজানো আদালতের পক্ষ থেকে তার এসব কথা আমলে নেয়া হয়নি।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল এক বিবৃতিতে বলেছেন, আটকাবস্থায় মুরসিকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে কিনা, পরিবার ও আইনজীবীদের সঙ্গে তার যোগাযোগের যথেষ্ট সুযোগ ছিল কিনা- এসব বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এছাড়া তাকে অনেক দিন ধরেই নির্জন কারাবাসে রাখার অভিযোগও রয়েছে। রুপার্ট কোলভিল বলেন, মুরসির মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিরপেক্ষ ও কার্যকর তদন্ত করতে বিচার বিভাগীয় কিংবা অন্য কোনও স্বাধীন কর্তৃপক্ষকে নিয়োগ দেওয়া উচিত।
এর আগে সোমবার এই মৃত্যু নিয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।