ইরানের আকাশসীমায় মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনা উদযাপন করছে দেশটির মানুষ। উদযাপনের পাশাপাশি এমন সাফল্যের জন্য দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর জন্যও প্রার্থনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে যে কর্মকর্তা এটি ভূপাতিতের নির্দেশ দিয়েছিলেন তার জন্য দোয়া করা হচ্ছে।
এই আয়োজনে একজন আলেম বলেন, যে কমান্ডার মার্কিন ড্রোনে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন তার জন্য আমরা বিশেষভাবে দোয়া করছি। যারা তার নির্দেশে এটি ভূপাতিত করেছেন তাদের জন্যও দোয়া করছি। এ সময় সেখানে সমবেত ব্যক্তিরা উচ্চকণ্ঠে ‘আমিন’ বলে আওয়াজ তোলেন।
এ প্রার্থনামূলক উদযাপন অবশ্য তেহরানের একটি কক্ষেই সীমাবদ্ধ নেই। দেশজুড়ে চলছে এমন উদযাপন আর প্রার্থনা।
এক সময় ইরানের রিভ্যুলুশনারি গার্ডের পলিটিক্যাল ব্যুরোর দায়িত্ব পালন করেছেন নাসের ঈমানি। এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, যা-ই ঘটুক না কেন ইরানের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের জন্য গত ৪৮ ঘণ্টা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমেরিকাকে পুনরায় সমীকরণ মেলাতে সাহায্য করবে। আপনি যেভাবেই দেখে থাকেন না কেন, ড্রোন ভূপাতিতের ঘটনায় ইরানই জিতেছে।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে পরমাণু নিয়ন্ত্রণবিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু গত বছর ইউরোপীয় মিত্রদের বাধা সত্ত্বেও ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে ইরানের ওপর তেল রফতানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ধারাবাহিক উত্তেজনার মধ্যেই সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে আরও এক হাজার মার্কিন সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ নামের একটি মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করেছে ইরানের সেনাবাহিনী।
প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে। তবে ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশের অভিযোগ নাকচ করে তারা দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক সীমার মধ্যে অবৈধভাবে ইরান তাদের ড্রোন ভূপাতিত করেছে। সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।