লিবিয়ায় বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশিও

চলতি সপ্তাহেই লিবিয়ার রাজধানীর কাছেই এক অভিবাসী আটককেন্দ্রে বিমান হামলায় হতাহতদের মধ্যে বাংলাদেশিও রয়েছেন। সম্প্রতি তাজুরা আটককেন্দ্রে চালানো ওই বিমান হামলায় একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও দুই জন। তবে এখনও তাদের পরিচয় জানা যায়নি। শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

cb6a40b07a56ea0e5f446db66a711fab-5d1c7e25b2dae

বুধবার লিবিয়ায় তাজুরা অভিবাসীদের আটককেন্দ্রে বিমান হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৮০ জন। হামলায় হতাহতদের বেশিরভাগই আফ্রিকান অভিবাসী হলেও তিনজন বাংলাদেশির ব্যাপার নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বন্দিশিবিরটি রাজধানী ত্রিপোলির কাছে তাজোরা এলাকায় অবস্থিত। সেখানে এ হামলার জন্য জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন স্বঘোষিত লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মিকে দায়ী করেছে লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার। এ সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল সেরা। 

একদিন আগেই জাতিসংঘ জানিয়েছিলো, তাজুরা আটককেন্দ্রে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৬০০ অভিবাসী ও শরণার্থী বন্দি রয়েছে। বিমান হামলায় অনেক প্রাণ হারিয়েছেন। আহতও হয়েছেন অনেকে। আমাদের ধারণা চূড়ান্ত হিসেবে আরও বেসামরিক হতাহতের কথা জানা যাবে। তাজুরা আটককেন্দ্রসহ ত্রিপোলিতে প্রায় ৩৩০০ অভিবাসী ও শরণার্থী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এছাড়া সহিংসতার ঝুঁকি তো রয়েছেই। এই কেন্দ্রগুলো অবশ্যই বন্ধ করে দিতে হবে।

লিবিয়ায় যুদ্ধ কেন চলছে? 

কোনও কর্তৃপক্ষই লিবিয়ার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। চরমভাবে অস্থিতিশীল দেশটির নিয়ন্ত্রণ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক এবং সামরিক গোষ্ঠীর হাতে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে একটি প্রধানমন্ত্রীর সারাজের নেতৃত্বাধীন এবং অপরটি জেনারেল হাফতারের নিয়ন্ত্রণাধীন। গত এপ্রিলে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে জেনারেল হাফতার। গত চার দশক ধরে লিবিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন জেনারেল হাফতার। ১৯৮০-র দশকে মতবিরোধের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনের আগ পর্যন্ত গাদ্দাফির কাছের মিত্র ছিলেন তিনি। ২০১১ সালের আন্দোলনের পর দেশে ফিরে পূর্বাঞ্চলে নিজের শক্ত ঘাঁটি গড়ে তোলেন। সমর্থন পান ফ্রান্স, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের। গাদ্দাফি সংশ্লিষ্টতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় তার প্রতি মানুষের মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে বেনগাজি এবং এর আশপাশের এলাকাগুলো থেকে কথিত ইসলামপন্থী জঙ্গিদের বিতাড়িত করায় অনেকে তাকে কৃতিত্ব দেন।