উড্ডয়নের আগে স্থগিত হলো চাঁদে ভারতের দ্বিতীয় অভিযান

নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টারও কম সময় আগে চাঁদে নিজেদের দ্বিতীয় অভিযান স্থগিত করেছে ভারত। ভারতের মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, উৎক্ষেপণ যান ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেওয়ায় ৫৬ মিনিট আগে চন্দ্রযান-২ এর উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয়। নতুন করে অভিযান শুরুর সময় শিগগিরই নির্ধারণ করা হবে। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে সোমবার ভোর ২টা ৫১ মিনিটে এই মহাকাশ যানটির চাঁদের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার সময় নির্ধারণ করা ছিল।চন্দ্রযান-২ মহাকাশ যানের উড্ডয়ন স্থগিত করেছে ভারত

চন্দ্রযান-১ নামের মহাকাশ যান ব্যবহার করে ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো চাঁদে অভিযানের প্রচেষ্টা চালায় ভারত। ওই মহাকাশযানটি চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করলেও চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করেনি। তবে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে চন্দ্রযান-২ এর নতুন অভিযানে চাঁদের পৃষ্ঠদেশেই মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে ভারত। এর মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠের পানি, খনিজ ও পাথরের গঠন বিষয়ক তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে দেশটি। এই প্রচেষ্টা সফল হলে চাঁদের পৃষ্ঠদেশে মহাকাশযান পাঠানো চতুর্থ দেশ হবে ভারত। এর আগে একই ধরণের অভিযানে সফল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন।

ভারতের মহাকাশ সংস্থার (আইএসআরও) প্রধান কে সিভান বলেছেন, নতুন এই অভিযানটি তাদের সংস্থার নেওয়া সবচেয়ে জটিল মহাকাশ অভিযান। সেপ্টেম্বর নাগাদ এটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুর পৃষ্ঠে অবতরণের কথা রয়েছে। সফলতা পেলে ওই অঞ্চলে এটিই হবে প্রথম কোনও অভিযান।

চন্দ্রযান-২ মহাকাশ যান চাঁদে পাঠাতে নিজেদের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক-৩ (জিএসএলভি এমকে-৩) ব্যবহার করছে ভারত। এটির ওজন ৬৪০ টন আর ৪৪ মিটার লম্বা। প্রায় ১৪ তলা ভবনের সমান এই যানটি। চন্দ্রযান-২ মহাকাশযানটির ওজন দুই হাজার ৩৭৯ কেজি। এর মূল অংশ তিনটি- অর্বিটার, বিক্রম নামের একটি ল্যান্ডার এবং রোভার প্রজ্ঞান। অর্বিটারটি থাকবে চাঁদের ওপরের অংশে। সেখান থেকে বিভিন্ন খনিজের ছবি তুলবে ও ম্যাপিং করা হবে। বিক্রম অর্থাৎ ল্যান্ডারটি চাঁদের ভূমিকম্প এবং তাপমাত্রা সংক্রান্ত বিষয়ে পর্যবেক্ষণ জারি রাখবে। পাশাপাশি, রোভারটি চলমান যানের মাধ্যমে চাঁদের মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। 

উৎক্ষেপণ সফল হলে ৩ লাখ ৪৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া শুরু করবে চন্দ্রযান-২। ৫৪ দিন পর এটি চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সরাসরি পথে মহাকাশ যানটি চাঁদে পাঠানোর মতো শক্তিশালী রকেট না থাকায় পৃথিবীর মহাকর্ষ শক্তি ব্যবহার করতে বেশ খানিকটা ঘোরা পথে চাঁদে অভিযান চালাচ্ছে আইএসআরও।