উপসাগরীয় অঞ্চলে তৃতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য

উপসাগরীয় অঞ্চলে তৃতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। জিব্রাল্টার প্রণালীতে ব্রিটিশ নৌবাহিনী ইরানি তেল ট্যাংকার আটকের পর দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যেই এমন ঘোষণা এলো। তবে ব্রিটিশ সরকারের দাবি, ইরান পরিস্থিতির সঙ্গে অঞ্চলটিতে তৃতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর কোনও সম্পর্ক নেই।

12মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরে পারস্য উপসাগরে ‘এইচএমএস কেন্ট’ যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হবে। কৌশলগত ওই অঞ্চলে নিরাপত্তা রক্ষার কাজে অংশগ্রহণ ধরে রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি যুক্তরাজ্যের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ। ইরানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উপসাগরীয় অঞ্চলে বর্তমানে ‘এইচএমএস মন্ট্রোস’ নামে তাদের যে যুদ্ধজাহাজটি রয়েছে সেটি মেরামতের জন্য দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর পরিবর্তে ‘এইচএমএস ডানকান’ নামে একটি ডেস্ট্রয়ার মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে ডানকান পারস্য উপসাগরে প্রবেশের কথা রয়েছে।

এদিকে জিব্রাল্টার প্রণালীতে আটক ইরানের তেলবাহী ট্যাংকার নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে তেহরান। লন্ডনে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হামিদ বায়েদিনেজাদ বলেছেন, আটক তেলবাহী সুপার ট্যাংকার গ্রেস-ওয়ানকে মুক্তি না দিলে যুক্তরাজ্যকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।

টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, বেআইনিভাবে ট্যাংকার আটক করে ব্রিটেন যে ভুল করেছে সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত হবে না। ইরানি জাহাজ কোনও আইন বা প্রথা ভঙ্গ করেনি। কিন্তু ব্রিটেন দস্যুতার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে বেআইনি কাজ করেছে। ইরানি রাষ্ট্রদূত জোর দিয়ে বলেন, ইরানি তেল ট্যাংকার ও কার্গোকে মুক্তি দিতে ব্যর্থ হলে ব্রিটিশ পদক্ষেপ বিনা জবাবে পার পাবে না।

গত ৪ জুলাই ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত জিব্রাল্টার প্রণালী থেকে ইরানি তেলবাহী সুপার ট্যাংকার গ্রেস-ওয়ান আটক করে ব্রিটিশ মেরিন সেনারা। ইতোমধ্যেই জাহাজের সব ক্রুকে মুক্তি দিয়েছে জিব্রাল্টার কর্তৃপক্ষ। তবে জাহাজটির বিষয়ে এখনও তদন্ত চালাচ্ছে তারা। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই ফোনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। ফোনালাপে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, ট্যাংকারের তেল কোথা থেকে এসেছে তা নিয়ে যুক্তরাজ্যের কোনও মাথাব্যথা নেই। বরং আমাদের চিন্তার বিষয় হচ্ছে এই তেল কোথায় যাচ্ছে। এটি সিরিয়ায় যাবে না এমন গ্যারান্টি পেলেই ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ট্যাংকারটি ছেড়ে দেবে।

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপের পরই তেল ট্যাংকার ইস্যুতে যুক্তরাজ্যকে কোনও ছাড় না দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন দেশটিতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত। আর এরপরই উপসাগরীয় অঞ্চলে তৃতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাজ্য। সূত্র: আল জাজিরা, পার্স টুডে।