সোমবার দ্বিতীয় দফায় চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টা চালাবে ভারত

প্রযুক্তিগত ত্রুটির জেরে স্থগিত হয়ে যাওয়া চন্দ্রযান-২ নামক অভিযান সফল করার জন্য দ্বিতীয় দফায় উৎক্ষেপণ প্রচেষ্টার তারিখ ঘোষণা করেছেভারত। এক টুইটার বার্তায় দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) জানিয়েছে, ২২ জুলাই (সোমবার) দুপুর ২টা ৪৩ মিনিট নাগাদ এ উৎক্ষেপণ প্রচেষ্টা চালানো হবে। গত সোমবার (১৫ জুলাই) শেষ মুহূর্তে প্রযুক্তিগত ত্রুটির জেরে স্থগিত হয়ে যায় চন্দ্রযান-২ অভিযান।

প্রতীকী ছবি
রবিবার দিনগত রাত ২টা ৫১ মিনিটের দিকে উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও রকেট সিস্টেমে প্রযুক্তিগত ত্রুটি থাকার কারণে ৫৬ মিনিট আগে অভিযানটি স্থগিত করা হয়। গত ১৫ জুলাই ভারতে চন্দ্রযান ২-এর অভিযান ঘিরে সকাল থেকেই সাজো সাজো রব ছিল শ্রীহরিকোটায়। সন্ধ্যার পর থেকে রীতিমতো কাউন্টডাউন শুরু হয়েছিল। তবে উৎক্ষেপণের নির্ধারিত সময়ের ৫৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড আগে ত্রুটি ধরা পড়ে রকেট সিস্টেমে। ইসরো-র বিজ্ঞানীরা জানান, রকেট থেকে জ্বালানি চুইয়ে পড়ছে।

পরে ইসরো সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো আভাস দিয়েছিলো, এ মাসেই দ্বিতীয় দফায় অভিযান প্রচেষ্টা চালানো হতে পারে। আর বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) টুইট করে দ্বিতয়ি দফার উৎক্ষেপণ প্রচেষ্টার চূড়ান্ত দিন ও সময় জানাল ইসরো৷

চন্দ্রযান-১ নামের মহাকাশ যান ব্যবহার করে ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো চাঁদে অভিযানের প্রচেষ্টা চালায় ভারত। ওই মহাকাশযানটি চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করলেও চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করেনি। তবে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে চন্দ্রযান-২ এর নতুন অভিযানে চাঁদের পৃষ্ঠদেশেই মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে ভারত। এর মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠের পানি, খনিজ ও পাথরের গঠন বিষয়ক তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে দেশটি। এই প্রচেষ্টা সফল হলে চাঁদের পৃষ্ঠদেশে মহাকাশযান পাঠানো চতুর্থ দেশ হবে ভারত। এর আগে একই ধরনের অভিযানে সফল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র,সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন। ভারতের মহাকাশ সংস্থার (আইএসআরও) প্রধান কে সিভান বলেছেন,নতুন এই অভিযানটি তাদের সংস্থার নেওয়া সবচেয়ে জটিল মহাকাশ অভিযান। সেপ্টেম্বর নাগাদ এটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুর পৃষ্ঠে অবতরণের কথা রয়েছে। সফলতা পেলে ওই অঞ্চলে এটিই হবে প্রথম কোনও অভিযান।

চন্দ্রযান-২ মহাকাশ যান চাঁদে পাঠাতে নিজেদের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক-৩ (জিএসএলভি এমকে-৩) ব্যবহার করছে ভারত। চন্দ্রযান-২ মহাকাশযানটির ওজন দুই হাজার ৩৭৯ কেজি। এর মূল অংশ তিনটি- অরবিটার,বিক্রম নামের একটি ল্যান্ডার এবং রোভার প্রজ্ঞান। উৎক্ষেপণ সফল হলে ৩ লাখ ৪৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া শুরু করবে চন্দ্রযান-২। ৫৪ দিন পর এটি চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।