কানাডায় পালিয়েছেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ইরানের নাগরিক

১১ বছর কারাদণ্ড ভোগের পর অল্প সময়ের ছুটি পেয়ে কানাডায় পালিয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া এক ইরানি নাগরিক। স্থায়ীভাবে কানাডায় বসবাসের অনুমতি রয়েছে সাইদ মালেকপাউর নামে ইরানি নাগরিকের। শুক্রবার তার বোন অনলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করে মালেকপাউরের কানাডায় ফেরার কথা নিশ্চিত করেন। ওই ভিডিওতে তাকে কানাডায় দেখা গেছে।  ইরানের বিচার বিভাগের বার্তা সংস্থার পক্ষ থেকেও তার দেশ ছেড়ে পালানোর কথা স্বীকার করা হয়েছে।ইরানি নাগরিক সাইদ মালেকপাউর

অনলাইনে ছবি আপলোডের একটি প্রোগ্রাম নির্মাণ করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় সাইদ মালেকপাউরকে। ইরানি কর্তৃপক্ষের দাবি পারস্য ভাষার পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটের জন্য ওই প্রোগ্রামটি বানানো হয়েছিল। ২০০৮ সালের অক্টোবরে অসুস্থ বাবাকে দেখতে ইরানে গেলে তাকে আটক করা হয়। তারপর থেকেই কারাবন্দি ছিলেন তিনি।

ইরানের বিচার বিভাগের বার্তা সংস্থা মিজান অনলাইনে প্রকাশিত বিবৃতিতে মুখপাত্র  গোলামহোসেন ইসমাইলি বলেন, তিন দিনের ছুটিতে ছিলেন মালেকপাউর। তার দেশত্যাগের  ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তারপরই অবৈধ উপায়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন তিনি।

মালেকপাউরের বোন তার কানাডায় ফেরার একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তিনি লেখেন, ‘অবশেষে দুঃস্বপ্নের অবসান। সে বাড়ি ফিরেছে আর বোনের সঙ্গে পুনর্মিলিত হয়েছে। নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কানাডাকে ধন্যবাদ’। তবে মালেকপাউর কিভাবে ফিরেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।

মালেকপাউরের মামলায় সম্পৃক্ত ছিলেন আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক পায়াম আখাবান। কানাডার সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের চাপের মুখে ইরান তাকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। আর তাকে পরে আবারও কারাগারে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। এর পরিবর্তে দেশত্যাগ করেন তিনি আর  তৃতীয় একটি দেশের মধ্য দিয়ে কানাডায় প্রবেশ করেন তিনি।

২০০৮ সালের অক্টোবরে গ্রেফতারের পর থেকেই ইরানের কারাগারে আটক ছিলেন সাইদ মালেকপাউর। তার দাবি তিনি যে প্রোগ্রামটি বানিয়েছিলেন তা ছিল ওপেন সোর্সের। আর সেকারণে তার অজ্ঞাতসারে অনেকেই তা ব্যবহার করেছে।

তবে ইরানের কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাকে ‘দুনিয়ায় অনিয়ম ছড়ানোর’ দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ইরানি কর্তৃপক্ষের দাবি পরে অনুশোচনা প্রকাশের পর তাকে দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, কারাবন্দি থাকার সময়ে মালেকপাউরকে শারিরীক ও মানসিক নিপীড়ন করা হয়েছে। এছাড়া এক বছরেরও বেশি সময় তাকে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে বলেও দাবি করে সংস্থাটি।