কাশ্মিরি নারী ও শিশুদের সুরক্ষার প্রশ্নে সোচ্চার মালালা

ভারত-শাসিত কাশ্মিরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের নোবেলজয়ী শিক্ষা-অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি সেখানকার নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। শান্তির পথে কাশ্মির সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মালালা ইউসুফজাই

ভারতের সরকার দেশটির সংবিধানে জম্মু ও কাশ্মিরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিল করে এলাকাটিকে দুটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কয়েকদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার মালালা টুইটার পোস্টের মাধ্যমে নিজের অবস্থান জানান। কাশ্মির সংঘাতের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট টেনে টুইটারে লেখেন, ‘যখন আমি শিশু ছিলাম, যখন আমার মা-বাবা শিশু ছিলম, এমনকী যখন আমার দাদা-দাদী তরুণ ছিল; তখন থেকেই কাশ্মিরের জনগণ বসবাস করছে সহিংসতার মধ্যে। বিগত সাতটি দশক কাশ্মিরের শিশুরা বেড়ে উঠছে মাত্রাতিরিক্ত সহিংসতার মধ্যে।’

মালালা লিখেছেন, আমি কাশ্মির নিয়ে ভাবতে বাধ্য হোই, কেননা আমার আবাস দক্ষিণ এশিয়ায়; যেখানে কাশ্মিরিসহ ১৮০ কোটি মানুষের সঙ্গে আমি থাকি। আমরা ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস, ভাষা, খাদ্যাভ্যাস আর রীতিনীতি পালন করি। আর আমি দৃঢ়ভবে মনে করি, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে পারি।’ তার মতে, বৈচিত্র্য আর ভিন্নতা নিয়ে উপমহাদেশের মানুষ পৃথিবীতে যে অবদান রাখছে তা গর্ব করার মতো।

২০১২ সালে নারী শিক্ষা নিয়ে সরব মালালার স্কুলবাসে উঠে একদল বন্দুকধারী তাকে গুলি করলে এ কিশোরী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনা তাকে বিশ্বজুড়ে নারী শিক্ষা ও মানবাধিকার কর্মীদের অনুপ্রেরণার প্রতীকে পরিণত করে। কাশ্মির ইস্যুতে টুইটার পোস্টে মালালা আরও লিখেছেন, ‘ভোগান্তি চলমান রাখা আর একে অপরকে আঘাত করার কোনও দরকার নেই আমাদের। আজকে আমি চিন্তিত কাশ্মিরের নারী আর শিশুদের নিয়ে, কোনও সহিংসতার ক্ষেত্রে যারা সবথেকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে এবং সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আশা রাখছি, দক্ষিণ এশিয়ার সমস্ত মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের ভোগান্তির অবসানে তৎপর হবে।’

যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার পরও পাকিস্তানি এ কিশোরী তার  প্রচার অব্যাহত রাখেন; ২০১৪ সালে সবচেয়ে কম বয়সে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। তার মতে, ‘আমাদের মতপার্থক্য থাকতেই পারে, আমাদের অবশ্যই মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে হবে, নারী ও শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি প্রাধান্য দিতে হবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ৭ দশকের সহিংসতার অবসান ঘটাতে হবে।’