কাশ্মিরে আরও সেনা মোতায়েন করবে ভারত

ঈদ উল আজহা উদযাপনকে সামনে রেখে জম্মু-কাশ্মিরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে'র এক প্রতিবেদন থেকে এ আভাস মিলেছে। তবে লেহ ও জম্মু এলাকা থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে শনিবার (১০) খুলে দেওয়া হচ্ছে উপত্যকার সব স্কুল ও কলেজগুলো

শুক্রবার কাশ্মিরের রাস্তায় টহল দেয় র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স
বুকারজয়ী ভারতীয় লেখক ও মানবাধিকারকর্মী অরুন্ধতী রায় কাশ্মিরকে দেখেন ‘একটি পরমাণু যুদ্ধক্ষেত্র এবং পৃথিবীর সবচেয়ে সামরিকীকরণকৃত এলাকা’ হিসেবে। সেই ২০১৩ সালে ‘আফজাল গুরুর ফাঁসি ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্ক’ শীর্ষক নিবন্ধে তিনি বলেছিলেন,‘এখানে [কাশ্মিরে] রয়েছে ভারতের পাঁচ লাখ সৈনিক। প্রতি চারজন বেসামরিক নাগরিকের বিপরীতে একজন সৈন্য! আবু গারিবের আদলে এখানকার আর্মি ক্যাম্প ও টর্চার কেন্দ্রগুলোই কাশ্মিরিদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের বার্তাবাহক।’ ২০১৩ সালের পর আরও ৫ বছর পেরিয়ে গেছে। কাশ্মির সংকটের সমাধানে সেখানে সেনা-সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। দমনপীড়নের পথেই হেঁটেছে ভারতীয় বাহিনী। এর সবশেষ সংযোজন হিসেবে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়ে তাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তর করেছে মোদি সরকার। নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্থানে থমকে গেছে কাশ্মিরিদের জীবন। স্বায়ত্তশাসন হারিয়ে ভারতীয় সার্বভৌম রাষ্ট্রের আওতায় তাদের জীবনের অধিকার আগের থেকেও বেশি করে আটকে পড়েছে রাষ্ট্রীয় সেনা/নিরাপত্তা বাহিনীর সন্দেহের কারাগারে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে খবর দিয়েছে, ১২ আগস্ট (সোমবার) ঈদ উদযাপনকে সামনে রেখে উপত্যকায় আরও বেশি করে সেনা মোতায়েন করবে ভারত সরকার। তবুও থামছে না বিক্ষোভ। শুক্রবার (৯ আগস্ট) শ্রীনগরে কমপক্ষে ১০ হাজার বিক্ষোভকারীকে ঠেকাতে টিয়ার গ্যাস ও ছররা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। সোমবার (৫ আগস্ট) সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে ভারত সরকার কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়ার পর থেকে নতুন করে নজিরবিহীন ধরপাকড় চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন সংযোগ। চলাফেরায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আটক রাখা হয়েছে কাশ্মিরি নেতাদের।

ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাশ্মির উপত্যকায় যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন করে রেখেছে ভারতীয় বাহিনী। ৩৭০ ধারা বাতিলের ১০ দিন আগেই তারা ড্রোন, মানবসম্পদ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি দিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করে নিয়েছে।