ভারতের কাশ্মির নীতির সমালোচনা করলো এইচআরডব্লিউ

কাশ্মির প্রশ্নে ভারতকে অবস্থান বদলের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সোমবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গলি বলেন, নিপীড়নমূলক নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করে ভারতের উচিত সেখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করা।

thumbs_b_c_0f3d968bc26fd672323ef883663e9fdf

গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দিন সকাল থেকে জম্মু-কাশ্মিরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে। দোকান, স্কুল, কলেজ ও অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনও গণপরিবহন নেই। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা জনশুণ্য রাস্তায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র সেনারা। নিরাপত্তা চৌকি, নজরদারি আর কারফিউয়ের ঘেরাটোপে বন্দি হয়ে পড়েছে কাশ্মিরিদের ঈদের আনন্দ। প্রতি বছরই ঈদুল আজহার অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে উৎসবের ঢেউ লেগে যায় উপত্যকায়। দলবেঁধে মানুষ বাজারে যায়; পোশাকসহ বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম কেনে। বেকারির দোকানগুলোতে সাজসাজ রব পড়ে যায়। তবে এবারের বাস্তবতা একেবারেই আলাদা।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, কাশ্মিরের বিশেষ সুবিধা কেড়ে নেওয়ার এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা বন্ধ। ঈদের দিনও বন্ধ ছিলো বড় মসজিদগুলো। ১৯৪৭ এর পর থেকে কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্তান বিবাদ চলে আসছে। এখন পর্যন্ত এখানে সহিংসতায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

সংস্থাটি জানায়, নিপীড়ন বন্ধ করে ভারত সরকারের উচিত সেখানে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। জননিরাপত্ত আইন ও প্রতিরক্ষা বাহিনীকে নেওয়া  বিশেষ ক্ষমতার আইন বন্ধ করা উচিত। এতে করে সরকারি বাহিনীর সদস্যরা বিচারের বাইরে থেকে যান।  নিরাপত্তা চৌকিতে কাশ্মিরিদের হয়রানি করার ঘটনাও কমবে এতে।

তবে এরও আগে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া উচিত বলে জানায় মানবাধিকার সংস্থাটি। তারা জানায়,  অচলাবস্থা বন্ধ করে সংবাদমাধ্যমকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া ও সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া জরুরি।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যেকোনও দেশই ব্যতিক্রমী বাস্তবতায় কোনও স্থানে অধিকার স্থগিত রাখতে পারেন। কিন্তু এটাই ‘স্বাভাবিক’ জীবনযাত্রা হতে পারে না। ভারত সরকারের উচিত নিজেদের কাশ্মির নীতি থেকে সরে আসা এবং তা খুব দ্রুত।