চুক্তিহীন ব্রেক্সিটে জ্বালানি ও ওষুধ সংকটে পড়বে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্য কোনও চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলে নানামুখী সংকটে পড়বে দেশটি। এমন আশঙ্কার কথাই উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া ব্রিটিশ সরকারের এক নথিতে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসে ফাঁস হওয়া ওই নথিতে বলা হয়েছে, শেষ পর্যন্ত নো-ডিল ব্রেক্সিট বা  চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর হলে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধ সংকটে পড়বে যুক্তরাজ্য। এছাড়া আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়েও জটিলতা তৈরি হবে।noname
একটি বাজে চুক্তির চেয়েও চুক্তিহীন ব্রেক্সিট আরও সংকটময় হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর সদস্যপদ না থাকায় ফ্রান্সের ভূখণ্ড ব্যবহারকারী লরিগুলোকে বাড়তি নিয়ম মেনে চলতে হবে। অথচ ফরাসি নিয়ম সম্পাদন করে কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতি নেই ৮৫ শতাংশ লরি-র। প্রক্রিয়াগত জটিলতায় এগুলোর গন্তব্যে পৌঁছাতে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

ব্রেক্সিট নিয়ে এ সপ্তাহেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে কথা বলবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ইউরোপীয় নেতাদের তিনি জানিয়ে দেবেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ব্রেক্সিট থেকে সরে আসতে পারে না আর চুক্তিহীন ব্রেক্সিট চাইলে অবশ্যই নতুন একটি চুক্তি করতে হবে। দৃশ্যত এ নিয়ে নিজ দেশেই রাজনীতিকদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বরিস জনসনকে।

চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিরোধীরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত সরকার নো ব্রেক্সিট ডিলের দিকে অগ্রসর হলে সেটি একটি দুর্যোগে রূপ নেবে। এই বিচ্ছেদ শুধু যুক্তরাজ্যকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে; এমন নয়। এটি বরং বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে লন্ডনকে আরও দুর্বল করে তুলবে। গত জুলাইয়ে পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে নো-ডিল ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী। তিনি বলেন, নো-ডিল ব্রেক্সিট যুক্তরাজ্যের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। এটি জনগণের কর্মসংস্থান ও জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে গত মে মাসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ৭ জুন যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের নেতার পদ থেকে থেরেসা মে সরে দাঁড়ানোর পর নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করে রক্ষণশীল দল। নতুন নেতা তথা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন। নির্বাচিত হওয়ার পরপরই আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন তিনি। এর মধ্যেই চুক্তিহীন ব্রেক্সিট নিয়ে গোপন সরকারি নথি ফাঁস করলো সানডে টাইমস। সূত্র: সানডে টাইমস, টিআরটি ওয়ার্ল্ড।