মৃত্যুর কথা মিডিয়াকে বললে মরদেহ নদীতে ফেলার হুমকি কাশ্মির পুলিশের

১৭ আগস্ট (শনিবার) জম্মু-কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের উপকণ্ঠে এক বিক্ষোভের সময় নিজ বাড়ির বাইরে টিয়ারগ্যাসের কবলে পড়েন ৬২ বছর বয়সী মোহাম্মদ আইয়ুব খান। হাসপাতালে তার মৃত্যু হলেও ডেথ সার্টিফিকেট পাচ্ছে না তার পরিবারের সদস্যরা। আইয়ুবের ছোট ভাই ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, পুলিশ কর্মকর্তারা চিকিৎসকদের বলে দিয়েছেন, তাদের যেন এটি না দেওয়া হয়। কেবল তা-ই হয়, আইয়ুবের দাফনের আগে তার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়, এই ঘটনা মিডিয়ায় জানালে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হবে।

noname

গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এর আগ মুহূর্তে জম্মু-কাশ্মিরে আধাসামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত ৩৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়। পরে নতুন করে সেখানে নিয়োজিত হয় আধাসামরিক বাহিনীর আরও ৮ হাজার সদস্য। উপত্যকায় কারফিউ জারির পাশাপাশি টেলিফোন-ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এতসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও সেখানে বিক্ষোভ ঠেকাতে পারছে না ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

গত শনিবার (১৭ আগস্ট) শ্রীনগরের উপশহরে নিজ বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন মোহাম্মদ আইয়ুব খান। ওই সময়ে বিক্ষুব্ধ পাথর নিক্ষেপকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাসের ক্যানিস্টার ছোড়ে পুলিশ। এর দুটো শেল ৬২ বছর বয়সী কাঠ ব্যবসায়ী আইয়ুবের সামনে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে রাস্তার ওপরে পড়ে গিয়ে তার মুখ দিয়ে গাঁজলা বের হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয় তিন কন্যার এই বাবাকে। কিন্তু পুলিশ জোর করে তার মরদেহ নিয়ে যায়। দাফনের জন্য পরিবারের মাত্র ১০ জনকে অনুমতি দেওয়া হয়। আর ওই রাতেই পুলিশি পাহারায় তাকে সমাহিত করা হয়।

আইয়ুবের ছোট ভাই শাবির আহমেদ খান এএফপিকে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের হুমকি দিয়েছিল যদি মিডিয়ায় কথা বলি বা বিক্ষোভের চেষ্টা করি তাহলে তার মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হবে। কবরস্থান পর্যন্ত আমাদের পাহারা দিয়ে নিয়ে যায় পুলিশের চারটি ভ্যান।

ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য আইয়ুবের পরিবারের সদস্যরা একাধিকবার হাসপাতালে গেছেন বলে জানান শাবির। তিনি দাবি করেন, চিকিৎসকরা তাদের বলেছেন, পুলিশ কর্মকর্তারা এটি ইস্যু করতে মানা করেছেন। তিনি বলেন, ‘তার মৃত্যু হয়তো সরকারি নথিভুক্তও হবে না কিন্তু আমাদের কাছে তিনি শহীদ। ভারতীয় নৃশংসতার আরেকটি দৃষ্টান্ত তার এই মৃত্যু’।