সৌদি আরবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

সৌদি আরবের জিজান বিমানবন্দরে রবিবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে সৌদি সামরিক জোটের দাবি, তারা ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট আই।noname

 

হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারিয়ি জানান, সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করে স্বল্পপাল্লার ১০টি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে ডজনখানেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। রিয়াদ যদি ইয়েমেনে তার বর্বর আগ্রাসন অব্যাহত রাখে তাহলে ভবিষ্যতে আরও কঠিন জবাব দেওয়া হবে।



ইয়েমেনের আল মাসিরা টেলিভিশনের খবর অনুযায়ী, বদর-ওয়ান ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে জিজান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে সৌদি যুদ্ধবিমান এবং অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ছিল। এছাড়া, জিজান বিমানবন্দরের বেশ কিছু সামরিক স্থাপনায়ও হামলা চালানো হয়েছে।

এর আগে গত ১৯ আগস্ট এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বিদ্রোহীদের নেতা মোহাম্মাদ আলী আল-হুথি দাবি করেন, ইয়েমেনে সৌদি সামরিক জোট পরাজিত হয়েছে। তিনি বলেন, ইয়েমেনে আগ্রাসন চালানোর জন্য সৌদি আরব ১৭টি দেশকে নিয়ে সামরিক জোট গঠন করলেও এখন মাত্র একটি বা দুটি দেশ এই রক্তক্ষয়ী আগ্রাসনে রিয়াদের সঙ্গে রয়েছে।
মোহাম্মাদ আলী আল-হুথি বলেন, ‘আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে হামলার জন্য ১৭টি দেশ একজোট হয়েছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র একটি বা দুটি দেশ এখন অবশিষ্ট রয়েছে। আমরা তাদেরও পরাজিত করবো।’

তিনি বলেন, ইয়েমেনের জনগণ আগ্রাসন ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। সৌদি আগ্রাসনের প্রথম দিন থেকে কোনও ধরনের পিছু হটা ছাড়াই আগ্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় হুথি বিদ্রোহীদেরও প্রশংসা করেন তিনি।

মোহাম্মাদ আলী আল-হুথি বলেন, ‘আমরা আজ একটি বৈশ্বিক দুর্বৃত্ত চক্রের মোকাবিলা করছি, যারা ইয়েমেনকে তাদের উপনিবেশে পরিণত করে এ দেশের জনগণকে ক্রীতদাস বানাতে চেয়েছিল।’

২০১৪ সালে রাজধানী সানা দখলের পর সৌদি সমর্থিত ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদু রাব্বু মনসুর আল হাদিকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে হুথি বিদ্রোহীরা। তারপর থেকেই দেশের বাইরে থাকা হাদিকে ক্ষমতায় ফেরাতে ২০১৫ সালের জুনে ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।

সৌদি জোটের বিরুদ্ধে প্রতিঘাতের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন প্রদেশে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে হুথি বিদ্রোহীরা। গত মে মাসের শেষদিকে পবিত্র নগরী মক্কা ও জেদ্দায় দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হলে তা ধ্বংস করার দাবি করে সৌদি প্রতিরক্ষা বাহিনী। প্রায় একই সময় সৌদির নাজরান বিমানবন্দরে তিন দফায় হামলা চালানোর দাবি করে হুথি বিদ্রোহীরা। চলতি আগস্টেই তারা সৌদি আরবের শাইবাহ তেলক্ষেত্রে ড্রোন হামলা চালায়। ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী বলছে, তারা সৌদি আরব, ইয়েমেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৩০০ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা টার্গেট করে হামলা অব্যাহত রাখবে।

হুথি বিদ্রোহীদের আরেক মুখপাত্র মুহাম্মাদ আবদুস সালামের দাবি, জাতিসংঘ সৌদি আরবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সানার ওপর অবরোধ তুলে নেওয়ার বিষয়ে তারা কিছুই করতে পারেনি। সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওপর অপরাধমূলক অবরোধ প্রত্যাহারে ব্যর্থ হয়েছে সৌদি সামরিক জোট। অথচ তাদের (সৌদি জোটের) বিমানবন্দরগুলোও হুথিদের হামলার সক্ষমতার মধ্যে রয়েছে।