কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি আজ

ভারতের মোদি সরকার কর্তৃক কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে করা একগুচ্ছ আবেদনের বিষয়ে আজ বুধবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং অন্যরা রাজ্যটিকে ভেঙে দুই টুকরো করে ফেলার বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপকে বেআইনি ও অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। পাশাপাশি, কাশ্মির টাইমসের কার্যনির্বাহী সম্পাদক গণমাধ্যমের ওপর থেকে প্রতিবন্ধকতা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। বাম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি উপত্যকায় আটক থাকা দলীয় নেতা মহম্মদ ইউসুফ তারিগামির মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করেছেন।
ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এসব আবেদন গ্রহণ করবেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি এসএ বোবদ এবং এস আবদুল নাজির।

সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানো পিটিশনগুলোতে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রপতির যে নির্দেশের মাধ্যমে সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত হওয়া কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হয়েছে তা অবৈধ।

আবেদনে বলা হয়েছে, ৩৭০ অনুচ্ছেদের অধীনে এই জাতীয় নির্দেশ কেবল তখনই জারি করা যেতে পারে যখন ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে কাশ্মিরের বিধানসভারও সম্মতি থাকবে। ১৯৫১ সালে ওই রাজ্যের বিধানসভার সম্মতিক্রমেই সংবিধানে ধারাটি প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাই এটি রদের বিষয়ে সিদ্ধান্তও রাজ্য বিধানসভার মতামত তথা সম্মতির ওপর নির্ভরশীল।

ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের দাবি, কাশ্মির এখন রাষ্ট্রপতির শাসনের অধীনে থাকায় রাজ্য বিধানসভার ক্ষমতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পার্লামেন্টে স্থানান্তরিত হয়ে গেছে। সুতরাং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নির্দেশের ওপরই গোটা বিষয়টি নির্ভরশীল।

আবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত রাতারাতি কাশ্মিরের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং স্বাধীনতাকে হরণ করেছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজ্যের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরামর্শ ছাড়া কার্যকর করা যায় না।

এক আবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সম্মতি ছাড়াই মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তন; সম্পূর্ণ নিজস্ব মতামত চাপিয়ে দেওয়ার মতো ব্যাপার। স্পষ্টতই এটা নির্বিচারি পদক্ষেপ।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে দুই টুকরো করে দেয় দিল্লি। ওই দিন সকাল থেকে কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে নিমজ্জিত হয় দুনিয়ার ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মির উপত্যকা। সূত্র: এনডিটিভি।