যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: তালেবান

তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক বিবৃতিতে এমনটাই দাবি করেছে আফগান তালেবান। রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।14
আফগানিস্তানে ১৮ বছরের মার্কিন দখলদারিত্বের অবসানকল্পে কাতারে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। আলোচনায় আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেষ মুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলোচনা বাতিলের ঘোষণার আগ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকভাবেই চলছিল।

গত ৫ সেপ্টেম্বর কাবুলের কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত কূটনৈতিক এলাকায় গাড়িবোমা হামলায় এক মার্কিন সেনাসহ ১২ জন নিহত হন। তালেবানরা ওই ঘটনার দায় স্বীকারের পর মার্কিন সেনাসদস্যের প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে দলটির সঙ্গে শান্তি আলোচনা বাতিলের ঘোষণা দেন ট্রাম্প।

আফগানিস্তানে এখন ১৪ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। কিন্তু ২০০১ সালে দেশটিতে মার্কিন সামরিক আগ্রাসনের পর যে কোনও সময়ের তুলনায় এখন দেশটির আরও বেশিসংখ্যক অঞ্চল তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে পরিস্থিতি বিবেচনায় তালেবানের সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো। কাতারে ইতোমধ্যেই তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রর অন্তত নয় দফা শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত সপ্তাহেই কাতারে মার্কিন আলোচকরা তালেবানের সঙ্গে একটি খসড়া শান্তি চুক্তির ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন। কিন্তু এরমধ্যেই বৃহস্পতিবারের ঘটনায় পরিস্থিতি বদলে যেতে থাকে। টুইটারে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প জানান, ক্যাম্প ডেভিডে তালেবানের সঙ্গে তার গোপন বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু তালেবানের হাতে মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার  পর তিনি ওই বৈঠক বাতিল এবং শান্তি আলোচনা বাতিল করে দিয়েছেন।

দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক অফিসের একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার জন্য তারা জরুরি অভ্যন্তরীণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। অবশ্য শান্তি আলোচনা যখন চলছিল তখনও তালেবান আফগান ও বিদেশি সেনাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো বন্ধ করেনি।

আফগানিস্তানে এখন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ হাজার সেনাসদস্য রয়েছে। তালেবানের সঙ্গে তাদের প্রাথমিক সমঝোতা অনুযায়ী, শান্তি চুক্তির আওতায় ২০ সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পাঁচ হাজার ৪০০ মার্কিন সেনাসদস্যকে প্রত্যাহারের কথা ছিল।

তালেবান-মার্কিন শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আগেও বিতর্ক ছিল। তবে অনেকে এ নিয়ে আশাবাদীও হয়েছিলেন। কাবুলের একজন নারী বিবিসি-কে বলেন, ‘কেন একজন আমেরিকানের মৃত্যুতে ট্রাম্প শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিলেন? এতো যে আফগানের মৃত্যু হয়েছে তাদের জীবনের কি তাহলে কোন দাম নেই?’