সৌদি আরবে অনুমোদিত হচ্ছে পাশ্চাত্য ধারার পোশাক?

পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাক পরে সৌদি নারী মাশায়েল আল-জালুদ চকচকে মোজাইকের ওপর দিয়ে যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন সবার নজর ছিল তার প্রতি। পোশাক-পরিচ্ছদের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত সপ্তাহে রাজধানী রিয়াদের একটি বিপণিবিতানে হাজির হন মাশায়েল। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের নজরে আসার পর সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

noname

কট্টর ইসলামি শাসন ব্যবস্থার তেল নির্ভর অর্থনীতির দেশ সৌদি আরবে নারীদের জন্য অভিভাবকত্ব আইন প্রচলিত রয়েছে। এই আইন অনুযায়ী নারীদের ঘরের বাইরে বের হওয়াসহ অন্য কাজের আগে অভিভাবেকর অনুমতির দরকার পড়ে। ২০১৭ সালে অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমাতে সৌদি যুবরাজ এক সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। সংস্কার প্রক্রিয়ার আওতায় এরইমধ্যে সৌদি নারীদের গাড়ি চালানো ও পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই দেশের বাইরে ভ্রমণের অনুমতি পেলেও সব বাধা দূর হয়নি এখনও।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নারী স্বাধীনতা নিয়ে নানা পদক্ষেপ নিলেও পোশাকের ওপর থাকা বিধিনিষেধের বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেননি। গত বছর মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে  তিনি সৌদি নারীদের পোশাকের বিধিবিধান শিথিল করার ইঙ্গিত দিলেও এখনও তা ঘটেনি। তবে ঝুঁকির কথা জেনেও অনেক নারী সাধারণ পোশাকেই বাইরে বের হতে শুরু করেছেন। মুষ্টিমেয় ওই নারীর একজন মাশায়েল। তিনি বলেন, ‘এখানে কোনও নির্দিষ্ট আইন নেই, নীতি নেই। আমার ক্ষতি হতে পারে। আবায়া ছাড়া বাইরে বের হওয়ার কারণে আমি ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হাতে আক্রমণের শিকার হতে পারি।’

পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক নারী ৩৩ বছর বয়সী মাশায়েলকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি তারকা? আপনি কি মডেল?’ হেসে উত্তর দেন মাশায়েল, ‘না, আমি তারকা নই। আমি একজন সাধারণ সৌদি নারী।’

জুলাইয়ে একবার বোরকা ছাড়া রিয়াদের আরেকটি বিপণিবিতানে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন মাশায়েল। তবে সে সময় তাকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নিজের পোশাক সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাশায়েল বলেন, ‘চার মাস ধরে আমি রিয়াদে বোরকা ছাড়া চলাফেরা করছি। আমি স্বাধীনভাবে, নিষেধাজ্ঞা ছাড়া চলাফেরা করতে চাই। কারণ, এটা আমি চাই। আমি যা পরতে চাই না, সেটা আমাকে কেউ পরাতে পারবে না।’