আফগানিস্তানে ৩০ কৃষক হত্যায় ড্রোন ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকারোক্তি

আফগানিস্তানের নাঙ্গাহার প্রদেশে একটি হামলায় ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।  বুধবার রাতে পাইন নাটের খামারে চালানো ওই হামলায় ৩০ জন কৃষক নিহত ও অপর ৪০ জন আহত হয়। এই হামলার জন্য পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারকে দায়ী করা হচ্ছিল।noname

বৃহস্পতিবার সকালে আফগান কর্মকর্তারা জানান, আগের রাতে নাঙ্গাহার প্রদেশের ওয়াজির টাঙ্গি এলাকায় আইএস যোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাতে গেলে ভুল করে তা একটি কৃষি খামারে চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় আফগান বাহিনী এই হামলা চালায় বলে স্বীকার করে তারা। নাঙ্গাহারের প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য সোহরাব কাদেরি জানান, ড্রোন ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়।

বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, আইএস যোদ্ধাদের নির্মূল করার লক্ষ্যে ড্রোন ব্যবহার করে ওই হামলা চালিয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সোন্নি লেজ্জেত বলেন, যেসব মানুষদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয় তাদের মধ্যে আইএস সদস্য রয়েছে বলে প্রাথমিক নির্দেশনা ছিল।  ঘটনা অনুসন্ধানে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার ওয়াজির টাঙ্গি এলাকার বয়স্ক উপজাতি ব্যক্তি মালিক রাহাত গুল বলেন, মূলত দিনমজুরেরা ওই খামারে কাজ করত। সারাদিনের কাজ শেষে বিশ্রামের জন্য তাঁবুর কাছে জড়ো হলে এই বিমান হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, কর্মীরা তাঁবুর পাশে আগুন জ্বালিয়ে এক সঙ্গে বসেছিল আর তখনই ড্রোন হামলা চালানো হয়।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসনে আফগানিস্তানে উৎখাত হয় তালেবান সরকার। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। গত কয়েক বছরে তালেবানের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আইএসও আফগানিস্তানে সক্রিয় রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।

আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কয়েক মাস ধরে আলোচনার পর সম্প্রতি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর কথা জানায় আফগানিস্তানের শসস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। তবে চলতি মাসে ওই আলোচনাকে মৃত ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তালেবান সতর্ক করে দিয়ে বলেছে ,আফগান সরকার ও বিদেশি বাহিনীর ওপর হামলা তীব্র করে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনগণকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রাখা হবে। গত কয়েক দিনে বেশ বড় ধরনের কয়েকটি হামলার দায় স্বীকার করেছে তালেবান।