শত্রুদের জন্য কোথাও নিরাপদ জায়গা থাকবে না: ইরান

ইরান কখনও তার নিজের সীমানায় যুদ্ধ প্রবেশ করতে দেবে না। সীমিত পর্যায়ের হামলা চালালেও শত্রুদের ধ্বংস অনিবার্য করে তোলার চেষ্টা করা হবে। শত্রুদের জন্য কোথাও নিরাপদ জায়গা থাকবে না। শনিবার তেহরানে এক প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে এমন মন্তব্য করেন ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআইরজিসি)-এর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি।
জেনারেল সালামি বলেন, ইরান তার সামরিক সক্ষমতার সামান্য অংশই প্রদর্শন করেছে। যে কেউ আমাদের সীমানা লঙ্ঘনের চেষ্টা করবে তাদের ওপর আমরা হামলা চালাবো এবং তাদেরকেই এর দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে।

তিনি বলেন, ৪০ বছর আগে তাবাস মরুভূমিতে আমেরিকার ডেল্টা ফোর্সের অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর তারা শুধু আমাদের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থার কথা বলে আসছে। তবে তারা এ ধরনের হামলা চালালে আমরা অবশ্যই তার চূড়ান্ত জবাব দেবো।

জেনারল সালামি বলেন, যারা তাদের ভূমিকে যুদ্ধের প্রধান ক্ষেত্র বানাতে চায় তারা এগিয়ে যাক, আমরা আমাদের দেশের মাটিতে যুদ্ধ প্রবেশ করতে দেবো না। কোনও আগ্রাসন কোথাও সীমাবদ্ধ থাকবে না। আগ্রাসীদের চূড়ান্ত ধ্বংস পর্যন্ত আমরা তাদের পিছু নেবো এবং তাদের জন্য কোথাও কোনও নিরাপদ জায়গা রাখা হবে না।

এমন সময়ে আইআইরজিসি প্রধান এসব কথা বললেন যার মাত্র একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ওয়াশিংটনের জন্য ইরানের দখল নেওয়া হবে খুবই সহজ সিদ্ধান্ত। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। একইদিন সৌদি-আমিরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি আরও জোরদারেরও ঘোষণা দিয়েছে পেন্টাগন।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের রয়েছে দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী। আমি আগেও বলেছি, ইরানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা হবে খুবই সহজ একটি সিদ্ধান্ত। এটা হবে খুবই সহজ, সবচেয়ে সহজ বিষয়।’

সম্প্রতি সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের হামলার ঘটনায় নতুন করে তেহরানের সঙ্গে বাকযুদ্ধে লিপ্ত হয় ওয়াশিংটন। এর মধ্যেই শুক্রবার ইরান দখলকে খুবই সহজ সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করলেন ট্রাম্প। এদিন ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপের প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেশটির ন্যাশনাল ব্যাংকের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর দুটি বৃহৎ তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলার পর সৌদি আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেন। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে হামলার নেপথ্যে ইরান জড়িত রয়েছে বলে দাবি করে। হামলার পর হুথি বিদ্রোহীরা দায় স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দায়ী করে আসছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন ওভাল অফিসে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি হচ্ছে ইরানের অর্থের সর্বশেষ উৎস। এটা খুব বড়। আমরা এখন ইরানের অর্থের সব উৎস বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছি। সূত্র: পার্স টুডে, আল জাজিরা।