বেইজিংয়ে চীনের সঙ্গে তালেবান প্রতিনিধিদের বৈঠক

চীনের বেইজিংয়ে আফগানিস্তান বিষয়ক চীনের বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করে তালেবানদের একটি প্রতিনিধি দল। তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন জানিয়েছেন, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবানদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা বাতিল ঘোষণা করার পর গত রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) তালেবান আর চীনের মধ্যে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ ব্যাপারে এখনও চীনা কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

c732afc9-0e31-4d3c-a9ec-fda2fe4c2fd1

টুইন টাওয়ারে হামলার পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে তালেবান সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই করে যাচ্ছে গোষ্ঠীটি। দীর্ঘ ১৮ বছরের যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে গত বছরের জুন থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা শুরু করেন তালেবান কর্মকর্তারা। গত মাসে এরই পরিপ্রেক্ষিতে একটি শান্তিচুক্তিতে একমত হয় দুই পক্ষ। সে সময় অনেকেই আশা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র-তালেবানদের ওই আলোচনার মধ্য দিয়ে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এবং আফগানিস্তানে ১৭ বছরের যুদ্ধের ইতি ঘটবে। তবে সম্প্রতি কাবুলে তালেবান হামলায় এক মার্কিন সেনা নিহতের পর ওই সব শান্তি আলোচনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তারপরই চলমান আলোচনা ভেস্তে যায়। এরপর এ বিষয় নিয়ে সম্প্রতি রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) চীনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তালেবান।

তালেবানের ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল বর্তমানে বেইজিং সফরে রয়েছে। সেখানে তারা আফগানিস্তান বিষয়ক চীনা বিশেষ প্রতিনিধি ডেং শিজুনের সাথে বৈঠক করেছেন। আফগান তালেবানের কাতার অফিসের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন তার টুইটার অ্যাকাউন্টে বলেছেন, ‘চীনা বিশেষ প্রতিনিধি বলেছেন মার্কিন-তালেবান চুক্তিটি একটি ভাল ফ্রেমওয়ার্ক যেটার মাধ্যমে আফগান ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধান হতে পারে এবং চীন এটাকে সমর্থন করে।’

শাহিন টুইটে লিখেছেন, তালেবান প্রতিনিধি দলের নেতা মোল্লা বারাদার বলেছেন যে তারা সংলাপে অংশ নিয়ে একটা ‘সমন্বিত চুক্তিতে’ পৌঁছেছিলেন। বারাদারকে উদ্বৃত করে শাহিন বলেছেন, ‘এখন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদি তার কথার মর্যাদা রাখতে না পারেন এবং সেটা ভঙ্গ করেন, তাহলে আফগানিস্তানে যে কোনও ধরনের বিভ্রান্তি ও রক্তপাতের জন্য তাকেই দায় নিতে হবে।’

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে এ ব্যাপারে ইমেইলে যোগাযোগ করা হলেও তাদের তাৎক্ষণিক জবাব পাওয়া যায়নি। কাবুলে নিযুক্ত চীনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

আগামী সপ্তাহে আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী তালেবানদের উৎখাত করার পর এটি দেশের চতুর্থ নির্বাচন। শান্তি আলোচনা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই নির্বাচন এখন গুরুত্ব পাচ্ছে, কারণ শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল, যেটার সম্ভাবনা এখন খুবই সামান্য।

শান্তি চুক্তি বাতিল হওয়ার আগে গত জুন মাসে তালেবানদের আরেকটি প্রতিনিধি দল চীন সফর করে দেশটির সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেছিলেন।