রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন সহায়তা ঘোষণা যুক্তরাজ্যের

মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ৮ কোটি ৭০ লাখ পাউন্ডের একটি চুক্তি করেছে তারা। এই নিয়ে রোহিঙ্গাদের তাদের মোট ঘোষিত সহায়তার পরিমাণ দাঁড়ালো ২২ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড, বাংলাদেশি টাকায় যা ২ হাজার ৩৭ লাখ কোটিরও বেশি।

f7ec78ffaa5112a8b1916f6aec442914-5c6721bd413d8

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাত লাখের মতো মানুষ। সহিংসতা কবলিত রাখাইনের পরিস্থিতি অনুসন্ধানে ওই বছরের মার্চে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। গত বছর ওই মিশনের প্রতিবেদনে ২০১৭ সালেরআগস্ট পরবর্তী সময়ে রাখাইনে মিয়ানমারের সেনা অভিযানকে গণহত্যা আখ্যা দেওয়া হয়।

 
যুক্তরাজ্যের নতুন এই সহায়তা প্যাকেজের আওতায় রয়েছে খাবার, চিকিৎসা, পানি, পরিচ্ছন্নতা সরঞ্জাম ও যৌন সহিংসতার শিকারদের জন্য কাউন্সিলিং। এছাড়া নারী ও কিশোরীদের মতো যারা ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদেরও সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেশটির  আন্তর্জাতিক সহায়তা বিষয়ক মন্ত্রী অলোক শর্মা বলেন, রোহিঙ্গাদের ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সামাল দেওয়ার সত্যিই খুব কঠিন। সাত লাখেরও বেশি মানুষ নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্তরাজ্য কাজ করছে, রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচানো ওষুধ, খাবার, পানি এবং আশ্রয় সরবরাহ করেছে। তাদের শিক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, নারী ও কিশোরীরা এই রোহিঙ্গাদের অর্ধেকেরও বেশি। তাদের জন্য নতুন সহায়তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ সাজায্য করা হবে। জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা ও পাচারের শিকারদের জন্য জরুরি আশ্রয় এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বরাদ্দ রয়েছে এই সহায়তায়। তিনি বলেন, এই সহায়তায় আমাদের রোহিঙ্গাদের প্রতি অব্যাহত সমর্থন প্রকাশ পায়।

সহিংসতা জোরালে হওয়ার দুই বছরেরও বেশি সময় পর এমন ঘোষণা আসলো। যুক্তরাজ্য জানায়, রোহিঙ্গারা যেন স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে দেশে ফিরে যেতে পারে সেই চেষ্টা করছে তারা।

নতুন এই প্যাকেজের আওতায় হাজার হাজার শরণার্থী মানসিক চিকিৎসা ও কনসালটেশন পাবেন। কক্সবাজারে ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকও তৈরি করা হবে। কোনও রোগ ছড়িয়ে পড়ার আগেই যেন ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং মৌলিক পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সহায়তা করা হবে।  এছাড়া নিকটবর্তী বনাঞ্চল যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, নারীদের জন্য আলাদা নিরাপদ আশ্রয় তৈরি করা হচ্ছে।